ঈমানের অফুরন্ত নিয়ামতের হক আদায় করার উপায়


প্রকাশিত: ১১:৫৭ এএম, ০৩ এপ্রিল ২০১৭

দুনিয়ায় ইসলাম আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বড় নিয়ামত। ঈমান গ্রহণ ও কুরআন-সুন্নাহর বাস্তবায়নের মাধ্যমেই এ নিয়ামত অর্জিত হয়। এ নিয়ামতের ঘোষণা দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আজি আমি তোমাদের আনুগত্যের বিধান (জীবন বিধান) পরিপূর্ণ করে দিলাম; তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করলাম। (সুরা মায়েদা : আয়াত ৩)

আল্লাহ তাআলা মানুষকে ইসলাম গ্রহণে ঈমানের মতো নিয়ামত দান করে যে অনুগ্রহ করেছেন, এর হক আদায় করা বান্দার জন্য একান্ত কর্তব্য। যে বান্দা ঈমানের মতো মহাঅনুগ্রহের হক আদায় করে না, তারা বড়ই অকৃতজ্ঞ। আর আল্লাহ তাআলার এ নিয়ামতের কথা ভুলে যাওয়াই হচ্ছা সবচেয়ে বড় অকৃতজ্ঞতা।

আল্লাহ তাআলার এ অফুরন্ত নিয়ামতের হক আদায় করা উপায় কি? এর উত্তর হলো-
আল্লাহ তাআলা বান্দাকে যখন মুসলিম জাতির অন্তর্ভুক্ত করে সৃষ্টি করেছেন, তখন বান্দার এ অনুগ্রহ ও দয়ার হক আদায় করতে হলে সবাইকে খাঁটি মুসলমান হতে হবে। আর খাঁটি মুসলমান হতে হলে সবাইকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামে বিধান পালন করতে হবে। শয়তানের অনুসরণ ও অনুকরণ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না। নিশ্চিত সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২০৮)

আবার আল্লাহ তাআলা যখন মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মত করে সৃষ্টি করেছেন, তখন পরিপূর্ণরূপে খাঁটিভাবে তাঁর অনুগামী হতে পারলেই বান্দার প্রতি আল্লাহ তাআলার এ অপার অনুগ্রহের হক আদায় করা সম্ভব হবে।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর জীবনে রয়েছে উত্তম (অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়) আদর্শ।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ২১)

আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান গ্রহণের পরিপূর্ণ স্বাদ সবার ভাগ্যে জুটে না। ইসলামের ইতিহাসে যার বহু প্রমাণ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা কুরআনে ইতিহাস আকারে তা তুলে ধরেছেন-

>> হজরত নূহ আলাইহিস সালামের পুত্র কেনআনের ঈমান লাভের সৌভাগ্য হয়নি অথচ আল্লাহ তাআলা নূহ আলাইহিস সালামের মাধ্যমে মানুষের জন্য নতুন পৃথিবী উপহার দিয়েছেন।

>> হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের পিতা ‘আজর’ ঈমান লাভ করতে পারেনি, সে ছিল মূর্তি প্রস্তুতকারক। অথচ হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা মুসলিম জাতির পিতা বানিয়েছেন। তাঁর বংশধারা থেকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রেরণ করেছেন। বিশেষ করে তাঁকে নিজের একান্ত বন্ধু হিসেবে খলিল উপাধিতে ভূষিত করেছেন।

>> হজরত লূত আলাইহিস সালাম আল্লাহ তাআলার প্রিয় পয়গাম্বর ছিলেন। তিনি মানুষকে তাওহিদের দাওয়াত দিয়েছেন অথচ তিনি তাঁর স্ত্রীকেই তাওহিদের অনুসারি করতে সক্ষম হননি।

বিশেষ করে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আপন চাচা আবু তালেব, যার কাছে থেকে তিনি বড় হয়েছেন। তাঁর কঠিন দূর্দিনেও তিনি ছায়ার মতো করে শত্রুর আক্রমণ থেকে হিফাজতে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনিও ইসলাম গ্রহণ করেননি।

তাছাড়া তাঁর চাচা আবু জাহেল, আবু লাহাবসহ তাঁর গোত্রের অনেকেই বিশ্বনবীর সান্নিধ্য লাভ করেও ঈমান গ্রহণ থেকে ছিল বঞ্চিত। তাদের ঈমান নিয়ামত নসিব হয়নি।

অথচ হাবশি ক্রীতদাস হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু আনহু, বয়োবৃদ্ধ হজরত সালমান ফারসি রাদিয়াল্লাহু আনহুসহ প্রমুখ সাহাবায়ে কেরামগণ দূর-দূরান্ত থেকে এসে প্রিয়নবির হাতে হাত রেখে ঈমানের অফুরন্ত নিয়ামত ও অমীয় সুধা পান করে জীবনকে ধন্য করেছেন, যা আল্লাহ তাআলার একান্ত বরকত ও রহমত।

পরিশেষে...
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ ও নিয়ামত শিরকমুক্ত ঈমান লাভ করতে কুরআন ও সুন্নাহর পরিপূর্ণ অনুসরণ ও অনুকরণ করার তাওফিক দান করুন। পরকালে বিশ্বনবির শাফায়াত লাভ ও সফলতা অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।