লকডাউন শেষে প্রথম দিন ১৫ ঘণ্টা ব্যাটিং করবেন মুশফিক
সবার জানা মুশফিকুর রহীম একজন ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ মানুষ, নিবেদিতপ্রাণ ক্রিকেটার। ক্রিকেট যার কাছে শুধু খেলা নয়, আরও বেশি কিছু। ক্রিকেটা তার ধ্যানজ্ঞান, সাধনা। পরিশ্রম যার নিত্যসঙ্গী। খেলা থাকুক আর নাই থাকুক, মুশফিক নিজেকে ফিট রাখতে সদা সচেষ্ট।
গত প্রায় দেড় যুগে তার চেয়ে কঠোর পরিশ্রম করার আর কেউ আসেনি বাংলাদেশ দলে। প্র্যাকটিসে সবসময় সবার আগে আসেন। সবার পরে অনুশীলন শেষ করে সাজঘরে ফেরেন। বাড়তি শ্রম, ঘাম ঝরানোয় তার ধারে কাছে কেউ নেই।
শুধু ফিটনেস ট্রেনিংই নয়, স্কিল ট্রেনিংটাও মুশফিক সবার চেয়ে বেশি করেন। শেরেবাংলার সেন্ট্রাল নেটে মুশফিকেরই সবচেয়ে বেশি সময় কাটে। এমন অনেক নজির আছে, পুরো দল অনুশীলন শেষে ড্রেসিংরুমে, কিন্তু মুশফিক নেট বোলারদের সঙ্গে শেরে বাংলার নেটে।
মোদ্দা কথা, নিজেকে সবসময় তৈরির রাখার কাজে এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান সদা সতর্ক, সাবধানি ও প্রস্তুত। কিন্তু করোনাভাইরাস এ ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ মানুষকে ঘরে আটকে রেখেছে। আর সবার মত তাকেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকতে হচ্ছে ঘরবন্দি।
খুব স্বাভাবিকভাবেই ফিজিক্যাল ট্রেনিং আর কিছু জিমের সামগ্রী নিয়ে এক্সারসাইজ ছাড়া আর কিছুই করার সুযোগ নেই। খেলা বহুদূরে, ব্যাট ও গ্লাভস হাতে স্কিল ট্রেনিংয়ের কোন অবকাশ নেই।
ক্রিকেট যার কাছে সবচেয়ে প্রিয়, যিনি খেলা আর প্র্যাকটিস দুই’ই উপভোগ করেন, প্র্যাকটিসে যার দিনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় কাটে- সেই মুশফিকুর রহিম করোনার মধ্যে ঘরে থেকে ছটফট করছেন মাঠে ফেরার আশায়।
করোনার ভয়াবহতা কমলে, দেশ লকডাউন মুক্ত হলে কী করবেন তিনি? রোববার রাতে ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহম্মদের সঙ্গে করা লাইভে প্রশ্ন উঠল, ‘খেলা পাগল মুশফিক করোনা মুক্ত পরিবেশে সর্বপ্রথম কী করবেন? সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে যাবেন মাঠে? নাকি অবস্থা, পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করে তবে যাবেন অনুশীলনে?
মাঠে ফেরার আশায় উন্মুখ হয়ে থাকা মুশফিক জবাবে যা বলেছেন, তার সারমর্ম হলো, তিনি মুখিয়ে আছেন নেটে ব্যাটিং করতে। সেই অনেকটা সময় ক্লান্তিতে থাকার পর যেমন পানির পিপাসা লাগে, দীর্ঘ দুই মাসের বেশি সময় ক্রিকেট মাঠে যেতে না পারা এবং অনুশীলন করতে না পেরে মুশফিকের অবস্থাও ঠিক তেমন। তিনিও মুখিয়ে আছেন, কবে লকডাউন শেষ হবে আর কবে মাঠে যাবেন।
লকডাউন মুক্ত বাংলাদেশে মুশফিক শুধু যে ঘর থেকে বের হয়ে হোম অব ক্রিকেটে যাবেন, তা নয়। সবার আগে নিজের প্রিয় ব্যাটটা হাতে নেবেন এবং মন ভরে নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করবেন। তখন শেরে বাংলাই হবে তার দ্বিতীয় ঠিকানা এবং প্রথম দিন অন্তত ১২ থেকে ১৫ ঘন্টা মাঠেই কাটাবেন।
এমনটা জানিয়ে হাসতে হাসতে মুশফিক বলেন, ‘লকডাউন কেটে গেলে আমি কী করবো, সে প্ল্যান করে ফেলেছি অলরেডি। আমার স্ত্রী আমাকে বলেছে, তোমার তো মনে হয় লকডাউনের পর থেকে ২৪ ঘন্টায় আর বাসায় আসার কোন চান্স নেই। আমিও তাকে বলেছি অন্তত প্রথম দিন ১০-১৫ ঘন্টার ভেতরে বাসায় আসার কোন চান্স নেই।’
‘ব্যাটিং তো অবশ্যই করব এবং সবার আগে করব। আগে মাঠে গিয়ে আমার ব্যাট ধরব। কারণ ফিটনেস অনুযায়ী আমার যা যা করণীয় ছিল, তা বাসায় বসেই করছি। কিন্তু ব্যাটিং তো আর করা হচ্ছে না। আল্লাহর রহমতে সব ফিজিক্যাল সাইড ভালই হয়েছে। সবকিছুই আল্লাহর রহমতে ভাল মত মেইনটেইন করছি। ফুড হ্যাবিটও ঠিক আছে।’
‘ব্যাটিংটা সবার আগে করব। আমার নেট বোলাররা আগেই জানবে, আমি প্রথম দিনই নেটে আসব এবং কতক্ষণ ব্যাট করব। নেট বোলারদের ভেতরে যারা আমাকে চেনে ও জানে আমি নিশ্চিত, তারা এখনই বুঝতে পারছে আমি প্রথম দিন কতক্ষণ নেটে ব্যাট করতে পারি!’
এআরবি/এসএএস/এমকেএইচ