টেস্ট ক্রিকেট হচ্ছে দাবা খেলার মতো: পোথাস

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ০২ জুন ২০২৩

রশিদ খান একাই একশো। ইতিহাস জানাচ্ছে, ৪ বছর আগে মানে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে একাই বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছিলেন লেগস্পিনার রশিদ। ভাববেন না যে শুধু লেগস্পিন গুগলি বলেই কুপোকাত হয়েছিল টাইগাররা। বলের পাশাপাশি ব্যাট হাতেও বাংলাদেশের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছিলেন রশিদ খান।

বল হাতে উভয় ইনিংসে ৫ বা তার বেশি (প্রথম ইনিংসে ৫/৫৫ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬/৪৯) উইকেট শিকারসহ ১১ উইকেট দখল করেন। আর ব্যাট হাতে প্রথমবার ৫১ আর পরের বার ২৪ রানের দুটি কার্যকর ইনিংস খেলে নিজ দলকে মজবুত অবস্থানে পৌঁছে দেন রশিদ। তার ম্যাচে ১১ উইকেট আর দুই ইনিংস মিলে ৭৫ রানের দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আফগানিস্তান পায় ২২৪ রানের বিরাট জয়।

কাজেই ইতিহাস ও পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ আসলে হেরেছিল রশিদ খানের চৌকশ নৈপুণ্যের কাছেই।

এবার আবার আফগানদের সাথে টেস্টে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ১৪ জুন শেরে বাংলায় শুরু বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানের একমাত্র টেস্ট। আগের চেয়ে এবার রশিদ খান আরও পরিণত, শানিত। তার অভিজ্ঞতা এবং পরিবেশ পরিস্থিতি ঠাউরে বল ও ব্যাট করার ক্ষমতা বেড়েছে বহুগুণে। তার পাশাপাশি আসছেন আইপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে, মানে পুরো ‘চার্জড আপ’ হয়ে।

তবে কি আবারো রশিদ খান তথা আফগান স্পিনের সামনেই কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে টাইগারদের? বেশিরভাগ ক্রিকেট অনুরাগীর ধারণা তাই। অনেকেরই মত, আসল লড়াই হবে আফগান স্পিনারদের সাথে বাংলাদেশের ব্যাটারদের। রশিদ খান তথা আফগান স্পিন সামলে ওঠার ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশের সাফল্য ও ব্যর্থতা।

যে যাই ভাবুন না কেন, বাংলাদেশের নতুন প্রধান সহকারী কেচ নিক পোথাস কিন্তু তা ভাবতে নারাজ। তিনি মানতে নারাজ যে, শুধু আফগান স্পিনাররাই বাংলাদেশের প্রধান বাধা।

এ দক্ষিণ আফ্রিকান কোচের ধারণা ভিন্ন। তিনি মনে করেন, আফগান স্পিনের পাশাপাশি পেস বোলিংকে আমলে আনতে হবে। তাদের পেস বোলিংটাও হেলাফেলার না।

নিজ দলের ক্রিকেটারদের তা মনে করিয়ে দিয়ে এ প্রধান সহকারী কোচ এবং এখন টাইগারদের ব্যাটিং পরামর্শকের ভূমিকায় থাকা পোথাসের কথা, ‘আফগানিস্তানের স্পিন যে কোনো দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ। তাদের শীর্ষ মানের স্পিন অ্যাটাক আছে। এই চ্যালেঞ্জটা আবার একই সাথে রোমাঞ্চকরও। একটা সমস্যা সমাধানের মতো পরিস্থিতি অবশ্যই রোমাঞ্চকর।’

তবে পোথাসের অনুভব, ‘স্পিনের সাথে বাংলাদেশের ব্যাটারদের আফগান পেস বোলিংও সামলাতে হবে। আফগান স্পিন নিয়ে খুব বেশি ভেবে পেসের কথা ভুলে গেলে হবে না।’

জাতীয় দলের নতুন প্রধান সহকারী কোচের শেষ কথা, ‘টেস্ট ম্যাচ হল দাবা খেলার মতো। প্রতিপক্ষ যা নিয়েই আসুক, সমাধান বের করতে হবে আমাদের। বাট ইটস এক্সাইটিং!’

মাঝে খুব গরম ছিল। এখন আবার প্রচণ্ড গরম বাংলাদেশে। ধারণা করা হচ্ছে, এই গা পুড়ে যাওয়া প্রাণ ওষ্ঠাগত দাবদাহেই হবে বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানের টেস্ট। টেস্টে এই গরম কি বাড়তি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে? এ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে পোথাস বলে ওঠেন, ‘গরম নিয়ে বলব, বাংলাদেশে তো গরমই থাকে।’

ক্যাম্প কেমন চলছে? পোথাসের ধারণা, ‘দারুণ চলছে। ছেলেরা বিশ্রাম পেয়েছে। সবাই বেশ ভালোভাবে প্রস্তুত। প্রধান কোচ এলে ইনটেনসিটিও বাড়বে। তবে গত ৩ দিন দারুণ কেটেছে।’

কৌশলী এ প্রশিক্ষক কিছুতেই নিজ দলের কৌশল সম্পর্কে পূর্ব ধারণা দিতে নারাজ। প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশ মানে তার দল কি পজিটিভ মাইন্ড অব ক্রিকেট খেলবে? পোথাসের কূটনৈতিক জবাব, ‘আমি যদি এটা বলে দেই, তাহলে তো কোনো গোপনীয়তা থাকলো না!’

এআরবি/এমএমআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।