সারাদেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ, বিটিআরসি ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ এএম, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫
এনইআইআর সংস্কারসহ কিছু দাবি আদায়ে আন্দোলন করে আসছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা/ফাইল ছবি

সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ঢাকায় মোবাইল ফোনের বেশিরভাগ দোকান বন্ধ রাখতে দেখা গেছে। 

আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হতে যাওয়া ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সংস্কার, সিন্ডিকেট প্রথা বিলোপ ও মোবাইল ফোন আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করাসহ কয়েকটি দাবি আদায়ে এ কর্মসূচি করছেন তারা।

এদিকে, দাবি আদায়ে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কার্যালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় মোবাইল ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি (এমবিসিবি)।

বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সায়ীদ পিয়াস জানান, দাবি আদায়ে রোববার সকাল থেকেই সারাদেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রেখেছেন। ব্যবসায়ীরা এখন বিটিআরসি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছেন। সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করা হবে।

মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এনইআইআর বাস্তবায়ন হলে লাখো ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নতুন এ নিয়মের ফলে শুধুমাত্র একটি বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হবে এবং বাড়তি করের চাপে গ্রাহক পর্যায়েও মোবাইলের দাম বেড়ে যাবে।

ব্যবসায়ীদের যত অভিযোগ ও দাবি

মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসার মার্কেট শেয়ার যাদের ৭০ শতাংশের বেশি, তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে এনইআইআর চালু করতে হবে। কোনোভাবেই তারা এনইআইআরের বিরুদ্ধে না। তবে এ প্রক্রিয়ার কিছু সংস্কার, ন্যায্য করনীতি প্রণয়ন, একচেটিয়া সিন্ডিকেট বিলোপ এবং মুক্ত বাণিজ্যের স্বার্থে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে তাদের কিছু দাবি ও প্রস্তাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা সরকারকে জানাতে চান। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের বিশাল সংখ্যক ব্যবসায়ীর কথা না শুনেই একতরফা এনইআইআর চালু করতে যাচ্ছে।

ব্যবসায়ী নেতাদের অভিযোগ, কোনো পূর্ব-পরামর্শ ছাড়াই হঠাৎ এনইআইআর বাস্তবায়নের ঘোষণা বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি করেছে। ফলে দেশের প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং এর সঙ্গে জড়িত ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। তারা বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে ব্যাংক থেকে শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। বর্তমানে তাদের স্টকে কোটি কোটি টাকার হ্যান্ডসেট রয়েছে। আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিপুল পরিমাণ অবিক্রিত হ্যান্ডসেট বিক্রি করা অসম্ভব। দাবি না মেনে গুটিকয়েক ব্যবসায়ীকে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দিলে তারা পথে বসবেন।

এমবিসিবির নেতারা জানান, এনইআইআরের বর্তমান কাঠামো যদি অপরিবর্তিতভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে শুল্ক ৫৭ শতাংশ হোক কিংবা শূন্য শতাংশ, কোনো অবস্থাতেই বৈধ উপায়ে মোবাইল ফোন আমদানি সম্ভব হবে না। কারণ বিটিআরসির আমদানি নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, কোনো বিদেশি ব্র্যান্ড যদি স্থানীয়ভাবে তাদের পণ্য সংযোজন করে, তাহলে সেই ব্র্যান্ডের কোনো মডেল অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আমদানি করতে পারবে না।

তাদের অভিযোগ, এ নীতিমালা কার্যত মনোপলি ব্যবসার সুযোগ তৈরি করছে। এর ফলে বাজারে বিদ্যমান প্রতিযোগিতা বিলুপ্ত হবে এবং প্রায় ১৮ কোটি মানুষের মোবাইল ফোন বাজারের নিয়ন্ত্রণ গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে যাবে। একই সঙ্গে স্মার্টফোনের দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে যাবে এবং সাধারণ ভোক্তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এএএইচ/এনএসআর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।