এই গরমে শীতের অনুভূতি পেতে ঘুরে আসুন উটিতে

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ১১ মে ২০২৪
ছবি-দক্ষিণ ভারতের অপূর্ব সুন্দর শৈলশহর ‘উটি’

প্রচণ্ড গরমে কোথাও ঘুরতে গিয়েও শান্তি নেই। কারণ প্রখর খরতাপে দিনের বেলায় ঘর থেকে এখন বের হওয়াই মুশকিল। কেমন হতো যদি গরমেও শীতের দেশে ঘুরতে যাওয়া যেত! তবে সবার তো সামর্থ্য নেই বিদেশ ভ্রমণের।

তাই চাইলে কম খরচেই ঘুরে আসতে পারেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের এক শহর থেকে। যেখানে এই গরমেও মিলবে শীতের অনুভূতি। বলছি দক্ষিণ ভারতের অপূর্ব সুন্দর শৈলশহর উটির কথা।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর শহরটি তামিলনাড়ুর বিখ্যাত ও জনপ্রিয় স্থান। এই শহরে হিমালয় না থাকলেও আছে নীলগিরি, চা বাগান, টয়ট্রেনসহ গভীর অরণ্য। উটি হানিমুনের জন্য সেরা এক স্থান কাপলদের জন্য। চলুন জেনে নেওয়া যাক উটি ভ্রমণে কী কী দেখবেন-

এই শহর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে, কৃত্রিমভাবে নির্মিত হ্রদটি ইউক্যালিপটাস গাছ ও ঝোপঝাড়ে ঘেরা। তাই কৃত্রিম হ্রদ হলেও তা বোঝার উপায় নেই। আর স্থানটি খুবই পছন্দের দম্পতিদের কাছে। মে মাসে এখানে নৌকা দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

হ্রদটির কিনারা বরাবর এখানে একটি হরিণ উদ্যান (ডিয়ার পার্ক) আছে। এটি ভারতের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত চিড়িয়াখানাগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৮২৩ সালে নীলগিরির থেকে বয়ে প্রবাহিত কিছু পর্বত প্রবাহকে একত্রে ইংরেজির ‘এল’ আকৃতির এই হ্রদ নির্মাণ করেন উটি শৈলশহরের প্রতিষ্ঠাতা জন সুলিভান।

নীলগিরি পর্বতে ঘেরা এই অপূর্ব সুন্দর হ্রদে বেশ খানিকটা সময় কাটাতে পারেন হানিমুন কাপলরা। উটি লেক ছাড়াও এমারাল্ড লেক, অ্যাভালাঞ্চে লেক, পায়কারা ঝরনা ও হ্রদও এখানকার জনপ্রিয় স্থান। আরও যা আছে-

ক্যাথরিন ঝরনা

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার উঁচু থেকে পাথরের মাটিতে আঁচড়ে পড়ছে ক্যাথরিন ঝরনা। জোড়া জলপ্রপাত দেখতে চাইলে উটির এই অন্যতম সুন্দর স্থানে যেতেই হবে। পাহাড়ের গায়ে পাথরের বিভাজিকা ঝরনাটিকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছে। সেখানে গেলে ঝরনার গায়ে দেখতে পাবেন রংধনু।

ডোড্ডাবেটা শৃঙ্গ

ডোড্ডাবেটা শৃঙ্গ উটির সর্বোচ্চ অংশ। নীলগিরি পর্বতকে এই শৃঙ্গ থেকে সম্পূর্ণ দেখতে পাওয়া যায়। সমুদ্রতল থেকে এই স্থানের উচ্চতা ২৬২৩ মিটার। সেখানকার টেলিস্কোপ হাউস থেকে এলাকার সৌন্দর্য্য দেখে আপনি মুগ্ধ হয়ে যাবেন।

গ্লেমরগান

উটির সবচেয়ে রোমান্টিক স্থান হলো গ্লেমরগান। তইউক্যালিপ্টাসের জঙ্গল ও স্বচ্ছ জলের হ্রদে ঘেরা একটি ছোট এক গ্রাম এটি। এখান থেকে মুদুমালাই জাতীয় উদ্যান ও মোয়ার ভ্যালির মন্ত্রমুগ্ধকর সৌন্দর্য্য দেখতে পাওয়া যায়। চাইলে সেখান থেকে ঘুরেও আসা যায়।

উটি’র শ্যুটিং স্পট ও গোলাপ বাগান

উটির আরেক অপূর্ব সুন্দর স্থান হলো শ্যুটিং স্পট। স্থানীয়রা এই স্থানকে ষষ্ঠ মাইল নামে ডাকে। সিনেমার রোমান্টিক দৃশ্য বা গানের শুটিংয়ের জন্য আদর্শ এক স্থান এটি। খোলা মাঠের চারধারে সবুজে সবুজ গাছপালা পরিবেশকে আরও মনোরম করে তুলেছে।

এমনই আরও এক স্থান হলো গোলাপ বাগান বা রোজ গার্ডেন। বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার গোলাপফুল ফুটে আছে এই বাগানে। ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে এই বাগানেই নাকি সর্বাধিক গোলাপ পাওয়া যায়। সারা বিশ্বের ১৫টি গোলাপ বাগানের মধ্যে একটি। ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব রোজ সোসাইটিস কর্তৃক সম্মানিত গার্ডেন অব এক্সিলেনস পুরস্কার পেয়েছে।

উটি বোটানিক্যাল গার্ডেন

উটির বোটানিক্যাল গার্ডেন জনপ্রিয় এক গন্তব্য পযর্ডটকদের কাছে। এই গার্ডেনের একটি প্রধান আকর্ষণ হল গ্লাস হাউস। প্রায় ৫০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই সবুজ উদ্যানটি ১৮৪৭ সালে তৈরি করেন ট্যুইডেলের মার্কুইস। এই বাগানে একবার প্রবেশ করলে আর বাইরে বেরোতে ইচ্ছে করবে না আপনার।

টাইগার হিল

উটিতেও আছে দার্জিলিংয়ের মতো একটি টাইগার হিল। এই পাহাড়ের সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। শহরের পূর্ব অংশে অবস্থিত টাইগার হিলের নৈসর্গিক দৃশ্য দেখে অনেকেই দিন কাটিয়ে দেন। সেখানে একটি বিশাল জলাধারও আছে।

জেএমএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।