খুলনার কাছেই ভ্রমণের কিছু স্থান

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৪০ পিএম, ১৭ মে ২০২৫

সুরাইয়া ইয়াসমিন সুমি

মিতুর ফোনেই ঘুম ভাঙে। সময় আনুমানিক বিকেল চারটা। বের হয়ে গেলাম। আমার যেতে দেরি হয়েছিল। যা-ই হোক, ছয়জন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একজন আগেই ডাকবাংলায় ছিল। তাই আপাতত আমরা পাঁচজন। মিতু, আনিকা, লাবু, ছোট বোন আর আমি। ইজিবাইকে উঠে পড়লাম। জনপ্রতি ২০ টাকা করে। সাত রাস্তায় যাবো। বলা বাহুল্য, সাত রাস্তা থেকে একটু ভেতরের দিকে খুলনার বিখ্যাত দারুল উলুম মসজিদ। পৌঁছে গেলাম সাত রাস্তায়। এখান থেকে যুক্ত হলো বৃষ্টি। পাঁচজন থেকে ছয়জন হয়ে গেলাম।

এরপর ঠিক হলো রিক্তাদের বাসায় যাবো। রিক্তা হলো মিতুর সবচেয়ে কাছের এক বান্ধবীর বোন। সেখান থেকে রিক্তা যুক্ত হলো আমাদের সাথে। সাতজন হয়ে গেলাম। সবাই মিলে গেলাম খুলনার বিখ্যাত দারুল উলুম মসজিদ দেখতে। মসজিদ এলাকায় প্রবেশ করতেই মন-প্রাণ জুড়িয়ে যায়। কৃত্রিম কারুকার্য আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অপরূপ মোহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

মসজিদে আছে সুবিশাল মিনার। যার উচ্চতা ২২৬ ফুট। বাইরে থেকে স্পষ্ট দেখা যায়। মসজিদের সাথেই সংযুক্ত রয়েছে জাব্বার মাজার। মসজিদ ও মাজার দুটাই সাদা টাইলস দ্বারা তৈরি। ভেতরে নারীরা তেমন প্রবেশ করতে পারেন না। কপাল ভালো থাকায় কাছ থেকে দেখার সুযোগ হলো। মসজিদের ভেতরে রয়েছে অর্কিড, বনসাই, সাইকাস পাইনাসসহ শোভাবর্ধনকারী গাছ। মসজিদের পরিবেশ আর শীতলতা মুগ্ধ করেছে। মনে এক প্রকার শান্তি ছড়িয়ে দিয়েছিল।

আরও পড়ুন

মসজিদ দেখার পর সবাই মিলে গেলাম রূপসা ব্রিজের দিকে। ইজিবাইকে জনপ্রতি ১০ টাকা করে। বসার জায়গা না থাকায় মিতু আর লাবুর কোলে বসে গেলাম। বন্ধুদের সাথে এমন খুনসুটির বন্ধন থাকলে আর কী লাগে! দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম ব্রিজে। সন্ধ্যায় যেন ব্রিজের সৌন্দর্য ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছিল। হাঁটতে হাঁটতে পুরো ব্রিজ আর ব্রিজ থেকে রূপসা নদী দেখা আসলেই অনেক আনন্দের। শীতল বাতাসে মন জুড়িয়ে গেলো। ব্রিজের নিচে একটি পার্ক আছে। যেহেতু ব্রিজের ওপর থেকে পার্ক দেখেছি, তাই আর ভেতরে যাইনি।

এরপর ঠিক হলো রূপসা ঘাটে যাবো। রূপসা ব্রিজের শুরুতেই এসে নিলাম ইজিবাইক। জনপ্রতি ১০ টাকা করে। যেতে যেতে রাতের সৌন্দর্য সাথে গান, আসলেই পরিবেশের ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছিল। আনিকার গানের গলা আসলেই অনেক সুন্দর। আনিকার সাথে মিতুও ধরেছিল গান। রূপসা ঘাটের দিকে সুন্দর একটি নিরিবিলি বসার জায়গা আছে। সেখানে গেলাম। রাতের পরিবেশ এককথায় অসাধারণ। বাগান বিলাসের সাথে নদীর পানি, ঠান্ডা বাতাস আর সাথে আছে দুধমালাই চা। আসলেই অন্যরকম অনুভূতি।

রাত হয়ে যাচ্ছে। ফিরতে হবে। তাই দেরি না করে উঠে গেলাম। সবাই মিলে ফিরতে হবে গন্তব্যে। ইজিবাইকেই জনপ্রতি ৩০ টাকা দিয়ে ঠিক করা হলো। রিক্তা নেমে গেলো সাত রাস্তার একটু আগে। আমরা ছয়জন একসাথেই পৌঁছে গেলাম আমাদের ঠিকানায়। যেতে যেতে ভাবলাম, মনের পাতায় মিশে থাকুক দিনগুলো।

লেখক: শিক্ষার্থী, অনার্স, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।