মুরগির খামারে মোশারেফের মাসে আয় লাখ টাকা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ভোলা
প্রকাশিত: ১২:৩৩ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২৫
প্রতি মাসেই মোশারেফের আয় লাখ টাকার বেশি, ছবি: জাগো নিউজ

মুরগির খামারে ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব ধনিয়া গ্রামের চৌকিদার বাড়ির মো. মোশারেফের। তিনি বর্তমানে প্রতি মাসেই প্রায় ৮-৯ লাখ টাকার মুরগি পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করেন। প্রতি মাসেই তার আয় লাখ টাকার বেশি। এ ছাড়া মোশারেফের মুরগির খামারে কাজ করে ভালোভাবেই সংসার চালাচ্ছেন কয়েকজন। মোশারেফের দাবি, তার ইচ্ছা ও পরিশ্রম থেকেই আজ সফল খামারি হয়েছেন।

সরেজমিনে জানা যায়, মোশারেফ তার বাড়ির আশপাশে গড়ে তুলেছেন ৫টি ব্রয়লার মুরগির খামার। বসতঘরের পেছনে করেছেন একটি ও বাড়ির সামনে করেছেন ৪টি খামার। সব খামারেই ব্রয়লার মুরগি রাখেন। মুরগির ছোট বাচ্চা কিনে এনে বড় করে তোলেন। নিজেই শ্রমিকদের সাথে কাজ করছেন। মোশারেফ কখনো খামারে গিয়ে মুরগিকে খাবার দিচ্ছেন। কোনো খামারে গিয়ে পানি দিচ্ছেন। আবার খামারের ময়লাও পরিষ্কার করছেন।

বিজ্ঞাপন

মুরগির খামারে মোশারেফের মাসে আয় লাখ টাকা

সফল খামারি মো. মোশারেফ জানান, এইচএসসি পাস করেই চট্টগ্রামের একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। সেখানে দীর্ঘদিন কাজ করেন। কিছু টাকা সঞ্চয় করেন। এরপর গ্রামের বাড়ি গিয়ে কিছু একটা করার চিন্তা মাথায় আসে। কী করবেন সেটি ভাবতে পারছিলেন না। ২০১২ সালে বিয়ে করেন। ২০১৪ সালের দিকে মাথায় আসে ব্রয়লার মুরগির খামার করার চিন্তা। তখন চাকরি ছেড়ে গ্রামের বাড়ি ফিরে আসেন। নিজের সঞ্চয়ের টাকায় মুরগির খামারের জন্য ঘর তৈরি করেন। সঙ্গে বাচ্চারও খামার গড়ে তোলেন। মাঝপথে টাকার সংকট দেখা দেয়। একটি এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে মুরগির খাবার কেনেন। তারপর মুরগি বিক্রি করে কিস্তির টাকা পরিশোধ করেও বেশ লাভবান হন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মোশারেফ জানান, একটি খামার কয়েক মাস করার পর আরেকটি করার পরিকল্পনা করেন। এরপর ১ বছরের মাথায়ই আরেকটি খামার তৈরি করেন। তখন একজন শ্রমিক রাখেন। দুজনই দুটি খামারে বেশ শ্রম দিতে থাকেন। মুরগি বিক্রি করে বেশ লাভবানও হতে থাকেন। এরপর একে একে আরও ৩টি খামার গড়ে তোলেন।

মুরগির খামারে মোশারেফের মাসে আয় লাখ টাকা

তিনি আরও জানান, ৫টি খামার থেকে প্রতি মাসে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার মুরগি পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করেন ৮-৯ লাখ টাকা। মুরগির খাবার খরচ ও ৩ শ্রমিকের বেতনসহ যাবতীয় খরচ বাদে প্রায় ১ লাখ টাকার মতো লাভ থাকে। তবে এখন পর্যন্ত তিনি সরকারি ভাবে সহযোগিতা পাননি। যদি কোনো সুযোগ-সুবিধা পান, তাহলে আরও খামার করে বেশি আয় করতে পারবেন বলে দাবি করেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

খামারের শ্রমিক মো. রাজিব জানান, প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি মোশারেফের খামারে কাজ করেন। প্রথমে দেড় হাজার টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে ১৫ হাজার টাকা বেতন দেন মোশারেফ। তার দাবি, দীর্ঘ বছর ধরে কাজ করে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তারও পরিকল্পনা আছে মুরগির খামার করার।

মুরগির খামারে মোশারেফের মাসে আয় লাখ টাকা

আরেক শ্রমিক মো. আবুল কামাল জানান, তিনি আগে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতেন। সেসময় প্রতিদিন কাজ থাকতো না। অভাবে সংসার চলতো। প্রায় ৩ বছর ধরে তিনি মোশারেফের খামারে নিয়মিত মাসিক বেতনে কাজ করেন। মাসে ১৪ হাজার টাকা পান। ওই টাকায় তার সংসার ভালোই চলছে বলে দাবি করেন।

বিজ্ঞাপন

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘মোশারেফের মতো ভোলা জেলায় এমন হাজারও খামারি আছেন। যারা ব্রয়লার ও দেশীয় মুরগির খামার করে লাখ টাকা আয় করছেন। আমরা সবাইকেই পরামর্শ দিই সফলতার জন্য। এ ছাড়া অনেককে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতাও করেছি।’

জুয়েল সাহা বিকাশ/এসইউ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।