চুয়াডাঙ্গায় সন্তোষজনক দাম
ফুলকপির বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
চুয়াডাঙ্গার মাঠজুড়ে এ বছর শীতকালীন সবজি মৌসুমে ফুলকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। সন্তোষজনক দাম পাওয়ায় কৃষকদের মুখে ফিরেছে স্বস্তির হাসি। প্রতি বিঘায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ করে কৃষকেরা ফুলকপি বিক্রি করছেন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায়। এতে প্রতি বিঘায় ৫০-৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ পাচ্ছেন। গত বছরের লোকসান কাটিয়ে কৃষকেরা এবার ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ফুলকপি চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমিতে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগাম বাজারে আসা এবং চাহিদা ভালো থাকায় কৃষকেরা এবার গতবারের তুলনায় বেশি দাম পাচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গাইদঘাট গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘২ বিঘা কপি চাষে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। বিক্রি করেছি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। গত বছর ক্ষতি হয়েছিল, এবার তা পুরোপুরি উঠে গেছে। দাম এমন ভালো থাকলে আগামীতে আরও জমিতে কপি চাষ করবো।’

গাড়াবাড়িয়া বাগানপাড়ার কৃষক মোহাম্মদ হাসানুর রহমান বলেন, ‘৭ বিঘা কপি চাষ করেছি। প্রতি বিঘা দিয়েছি ১ লাখ ১০ হাজারে। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ৬০-৭০ হাজার টাকা লাভ এসেছে। গত বছর যেখানে ৬০-৭০ হাজারে বিক্রি করেছি। এ বছর এক লাফে দাম বেড়েছে অর্ধলক্ষ টাকা।’
আরও পড়ুন
শরীয়তপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে বিনা চাষ পদ্ধতির রসুন আবাদ
পেঁপে চাষে সফল অধ্যাপক মোস্তফা কামাল, বছরে আয় ১০ লাখ
পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার খামার দেখাশোনা করেন তরুণ চাষি মোহাম্মদ আরাফাত। তিনি বলেন, ‘৩ বিঘা কপি চাষ করেছি। দেড় বিঘা আগাম কপি বিক্রি করেছি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বিঘা দরে। এখন সাধারণ কপির দাম ৮০-৯০ হাজার টাকা চলছে। খরচ বাদেও ৫০-৬০ হাজার টাকা লাভ হবে।’
গাড়াবাড়িয়ার আরেক চাষি মোহাম্মদ শাহজান আলী বলেন, ‘এবার আবহাওয়া খুবই অনুকূলে ছিল। তাই ফলন দারুণ হয়েছে। আগাম কপি বিক্রি করেছি ১ লাখ ২০ হাজারে। খরচ ৩০-৩৫ হাজার, লাভ পেয়েছি ৬০-৭০ হাজার টাকা। গত বছরের লোকসান এবারে পুরো ঘুচে গেছে।’

চুয়াডাঙ্গা সদরের বেলগাছি গ্রামের ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এ বছর চাহিদা মোটামুটি ভালো। বাজারে সরবরাহও বেশি। আমরা পাইকাররা আগের বছরের চেয়ে ভালোভাবে বিক্রি করতে পারছি। কৃষকেরাও তাদের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা সবজি উৎপাদনের অন্যতম প্রধান জেলা। এবার শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ২২৮ হেক্টর। এর মধ্যে ফুলকপি ১ হাজার ৪৯৪ হেক্টর। ফলন যেমন ভালো; দামও তেমনই। কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। আমরা নিয়মিত তাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি।’
এসইউ