রূপগঞ্জে মানবেতর জীবনযাপন করছেন নারী শ্রমিকরা


প্রকাশিত: ০৭:০৯ এএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রূপগঞ্জের গার্মেন্টসগুলোতে নারী শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের অবহেলার শিকার হচ্ছেন। বঞ্চিত এই নারীদের কর্মক্ষেত্র গার্মেন্টেসে নেই কোন বিধিমালা। বেতন কম, অতিরিক্ত খাটুনির পাশাপাশি নেই মাতৃত্ব ও অবসরকালীন সুবিধা। অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটছে তাদের জীবন।

জানা গেছে, কাঁচপুর ব্রিজ থেকে রূপগঞ্জের ভুলতা গাউছিয়া এলাকা পর্যন্ত প্রায় অর্ধ-শতাধিক গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। এ সকল গার্মেন্টেসে কাজ করছে প্রায় ১ লক্ষাধিক শ্রমিক। আর এদের ৯০ ভাগই নারী।

এক অর্থনৈতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে প্রতি বছর তৈরি পোশাক রফতানি করে প্রায় ৩ হাজার মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে যা মোট ফতানি আয়ের ৫৩ থেকে ৫৪ ভাগ। তাতে গার্মেন্টেস মালিকরা আর্থিক লাভবান হলেও বঞ্চিত এসব নারী শ্রমিকেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

জানা গেছে, এই সকল নারী শ্রমিকদের মাসিক বেতন ৮০০- ১৭০০ টাকায় ১২ ঘণ্টা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করে থাকতে হয়। এক খুপরি ঘরে ৭/৮ জন কিংবা একটি কক্ষে ৮/১০ জন ঠাসা ও ঘিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করেন। গ্রীষ্মকালীন সময়ে ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকতে গিয়ে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে। খেতে হচ্ছে বাসি-পঁচা নিম্নমানের খাবার। সেবা কিংবা মাতৃত্তকালীন ছুটিও পায় না তারা।

একই সঙ্গে গার্মেন্টস কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বখাটেদের হাতে নারী শ্রমিকরা প্রায়ই যৌন হয়রানির শিকার হন। মান-সম্মানের কারণে যার ১০ ভাগ ঘটনারও মামলা হয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলা হলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে তুলে নিতে হয়। যেতে হয় আপোষ মীমাংসায়।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেন, নারী শ্রমিকদের নির্যাতনের অভিযোগ পেলে তা গুরুত্ব সহকারে আইনি সহায়তা দেয়া হয়।

এক তথ্যে জানা যায়, রূপগঞ্জে গার্মেন্টস শিল্পে নিয়োজিত যৌন হয়রানিমূলক নির্যাতিত নারীর সংখ্যা প্রায় ৩৩ ভাগ। গার্মেন্টস মালিক ও তাদের নিয়োজিত সন্ত্রাসীদের চাপের মুখে নারী কর্মীরা কোনো প্রকার ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না। নানামুখী সমস্যার কারণে গার্মেন্টস শিল্পে নিয়োজিত নারীরা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। জীবনযাপন করছে মানবেতর।

এ ব্যাপারে উপজেলার ম্যাক্স গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির জাগো নিউজকে বলেন, তার পরিচালনাধীন গার্মেন্টসগুলো সরকারি বিধিমালা মেনে চলছে। ন্যায্য সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে শ্রমিকরা। রূপগঞ্জের ২/১ টি গার্মেন্টস বিধিমালা মেনে চললেও বাকিরা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না।

মীর আব্দুল আলীম/এফএ/এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।