ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

অবৈধভাবে ডরমিটরিতে বসবাসের তালিকায় উপ-উপাচার্য!

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৮:৪০ পিএম, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
ইনসেটে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য নির্মিত ডরমিটরি-২ দখল করে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও বাসা বরাদ্দ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলীর নামও।

নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার তিন বছর পার হলেও প্রশাসন এখনো বৈধ বরাদ্দ দিতে পারেনি। ২০২৩ সালের ২১ জুন শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি অংশ ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলার ১৬টি কক্ষ তালা ভেঙে দখল করেন। অভিযোগ রয়েছে, সেই তালিকায় উপ-উপাচার্যের নামও ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিস সূত্র জানায়, দুই কক্ষবিশিষ্ট প্রতিটি বাসার মাসিক ভাড়া দুই হাজার ১০০ টাকা। সে হিসেবে দুই বছর ৩ মাসে প্রায় ৯ লাখ টাকার বেশি ভাড়া বকেয়া হয়েছে এসব অবৈধ দখলকৃত কক্ষের। তবে প্রশাসনের বৈধ বরাদ্দ না থাকায় ভাড়া আদায় সম্ভব হয়নি।

গত ২৯ জুন অনুষ্ঠিত বাসা বরাদ্দ কমিটির বৈঠকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে বরাদ্দহীন বাসা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে নির্ধারিত সময় (৩১ আগস্ট) পেরিয়ে গেলেও কেউ বাসা ত্যাগ করেননি বলে জানায় এস্টেট শাখা।

এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেন, ‌‘আমি দীর্ঘদিন ধরে আবাসন সংকটে ভুগছি। যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করেও বাসা পাইনি। অথচ যারা অবৈধভাবে দখল করেছিলেন, তারা এখনো একইভাবে অবস্থান করছেন। প্রশাসনের নীরবতা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, ‘উপ-উপাচার্য নিজেই অভিযুক্ত হওয়ায় তিনি বিষয়টি নিয়ে দৃঢ় অবস্থান নিচ্ছেন না। দীর্ঘদিন চিঠির মেয়াদ পার হয়ে গেলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি।’

এ বিষয়ে এস্টেট অফিসের প্রধান মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘পূর্ববর্তী প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছিল। বর্তমান প্রশাসন তাদের চিঠি দিয়েছে। তবে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা এখনো অবস্থান করছেন। যদি প্রশাসন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়, আমরা বকেয়া ভাড়াও আদায় করতে পারবো।’

অবৈধ দখলকারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ‘আমরা একাধিকবার বাসা ছাড়ার অনুরোধ জানিয়েছি। তবে তারা এখনো বাসা ত্যাগ করেননি। আগামী সপ্তাহে মিটিং করে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।’

অবৈধভাবে নিজে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেসময় একটি কক্ষ খালি থাকায় অল্প কিছুদিনের জন্য আরেকজন শিক্ষকের সঙ্গে শেয়ার করে ছিলাম। পরে বৈধ বরাদ্দ পাওয়ার পর কক্ষটি ছেড়ে দিই। আমার বিরুদ্ধে আনা অবৈধ বসবাসকারীদের প্রশ্রয়ের অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’

ইরফান উল্লাহ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।