চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্য দপ্তরের সামনে ‘অনিয়ম-দুর্নীতির প্রদর্শনী’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক চবি
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ পিএম, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু চত্বরে ঝুলানো বিশাল বড় বড় ব্যানার। ব্যানারে শতাধিক সংবাদ। সবগুলো সংবাদই উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সময়কালে হওয়া নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন। ১০ দিন ধরে খোদ উপাচার্যের অফিসের সামনেই এমন প্রদর্শনী চলছে। তবে এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপহীন চবি উপাচার্য।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, উৎসুক শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঘুরে দেখছেন এ প্রদর্শনী। সাতটি বড় ব্যানারে রয়েছে প্রায় ১১২টি সংবাদ। সব সংবাদই উপাচার্যের নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়মসহ নেতিবাচক কর্মকাণ্ড নিয়ে।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, চবিতে এক বছরে ৬৮ কোটি টাকার অনিয়ম; চবির প্রক্টর অফিস হাওয়া ভবন, অভিযোগের পাহাড়; সংকট নেই তবুও শিক্ষক নিয়োগে মরিয়া প্রশাসন; চবিতে ১৬ জনের পদত্যাগ-নেপথ্যে ভিসি-প্রক্টর দ্বন্দ্ব; চবি উপাচার্যের মেয়েকে টাকা ধার দিয়ে বিপাকে শিক্ষক; দুই বছরে ১৮৭ নিয়োগ, প্রতিবারই ছিল ‘বিতর্ক’; নিয়োগে লেনদেন, সাবেক ব্যক্তিগত সহকারীকে বাঁচাতে মরিয়া উপাচার্য; যোগ্যতা ছাড়াই চবির শিক্ষক হচ্ছেন সহকারী প্রক্টরের স্ত্রী; এক সেমিনারেই খরচ সাড়ে ১৮ লাখ টাকা; শিক্ষকরা আন্দোলনে, ভিসি গানের আসরে; চবি উপাচার্যকে লিগ্যাল নোটিশসহ বিভিন্ন খবর।

উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ২৩ জানুয়ারি ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কি এভাবেই চলবে’ শিরোনামে সংবাদ প্রদর্শনীর আয়োজন করে শিক্ষক সমিতি। প্রতিদিনই প্রদর্শনীতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সংবাদ।

এর আগে দুই বিভাগের পরিকল্পনা কমিটির আপত্তির মুখেই ১৭ ডিসেম্বর আইন বিভাগ ও ১৮ ডিসেম্বর বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড ডাকা হয়। ১৭ ডিসেম্বর আইন বিভাগের নিয়োগ বোর্ড বাতিলের দাবিতে উপাচার্য কার্যালয়ে অবস্থান করেও কোনো সুরাহা না হলে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ১৮ ডিসেম্বর থেকে টানা কর্মসূচি ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শীতকালীন বন্ধ ও নির্বাচনের কারণে ২২ ডিসেম্বর থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত ছিল। এরপর থেকে আবারো লাগাতার কর্মসূচি শুরু হয়। সংবাদপত্রে উপাচার্যের অনিয়ম দুর্নীতির প্রদর্শনী টানা আন্দোলনের অংশ বলছেন শিক্ষক সমিতির নেতারা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক জাগো নিউজকে বলেন, যে পরিমাণ অনিয়ম দীর্ঘদিন থেকে প্রশাসনের অধীনে হচ্ছে তা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অনেকেই জানেন না। অনেকের ধারণাও নেই কি পরিমাণ দুর্নীতি হচ্ছে। প্রদর্শনীর মাধ্যমে সবগুলো সংবাদ একত্রে দেখার সুযোগ হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হবে এবং উত্তরণের জন্য সচেষ্ট হবে।

তিনি আরও বলেন, উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে দীর্ঘদিন থেকেই আমাদের আন্দোলন চলমান। সংবাদ প্রদর্শনী তার একটি। এখানে প্রতিদিনই নতুন নতুন সংবাদ আমরা সংযুক্ত করছি।

আহমেদ জুনাইদ/এনআইবি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।