রাজশাহীতে সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম তিনগুণ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী
প্রকাশিত: ১২:১৫ পিএম, ১২ জুলাই ২০২৫

রাজশাহীতে সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। গত সপ্তাহে কেজিপ্রতি ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে মান ভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। বিক্রেতা বলছেন, সরবরাহ কমের কারণে দাম বেড়েছে মরিচের।

শনিবার (১২ জুলাই) রাজশাহী নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা দেখা গেছে। এছাড়াও এ সপ্তাহে মাছ ও সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বেগুন, শসা, টমেটো, কাঁকরোল, সজনে ডাটার কেজি সেঞ্চুরি ছাড়িয়েছে। বেড়েছে মাছ ও মুরগির দামও। স্বস্তি নেই চালের বাজারেও।

নগরীর খড়খড়ি পাইকারি বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতারা পণ্য কিনে এনে নগরীতে বিক্রি করেন। এখানে গিয়ে দেখা গেছে, মরিচের সরবরাহ অনেক কম। এখানে পাকা লাল মরিচ বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দাম কম। আর কাঁচা সবুজ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজিতে।

বিক্রির জন্য এই হাটে কয়েক কেজি মরিচ আনেন পারিলা গ্রামের কৃষক মনির হোসেন। তিনি জানান, পারিলা গ্রামে তার কয়েক শতাংশ মরিচ ক্ষেতে কয়েকদিন ধরে পানি জমে আছে। খেতে নামা যাচ্ছে না। খেতের পাশ থেকে কিছু মরিচ তুলেছেন। সেগুলো বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন। তিনি ৩০০ টাকা কেজি দরে দাম চাচ্ছেন।
তার আশঙ্কা, আর দুই-তিন দিন এমন বৃষ্টি হলে মরিচ ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাবে। এরইমধ্যে কিছু গাছ পচে গেছে। পানি নামার জায়গা নেই।

বিক্রেতা আলী হোসেন জানান, কয়েক দিনের বৃষ্টিতে গাছে মরিচ নেই। এ কারণে দাম বেড়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ৩৬০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। বৃষ্টি কমলে হয়ত দাম কমে যাবে। আর বৃষ্টি বাড়তে থাকলে মরিচগাছ মরে যাবে, তখন দাম আরও বাড়বে।

নগরীর বিনোদপুর ও সাহেববাজার এলাকার কাঁচাবাজারেও মরিচের ঘাটতি নজরে পড়েছে। সেখানে মানভেদে কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় মরিচ বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এসব এলাকার বিক্রেতারা জানান, রোদ না উঠলে দাম কমবে না।

বিনোদপুর বাজারের ব্যবসায়ী রায়হান আলী বলেন, বৃষ্টির কারণে মরিচের সরবরাহ নেই বললেই চলে।

এদিকে বাজারে বেড়েছে সোনালি মুরগির দামও। ইলিশ মাছের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ২৪০০ টাকা থেকে বেড়ে তিন হাজার টাকায় ঠেকেছে কেজি। বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষায় ফলন কমে গেছে। এ জন্য সবকিছুর দাম বেশি।

রাজশাহীতে সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম তিনগুণ

সপ্তাহের ব্যবধানে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৩০০ টাকা কেজি হয়েছে। তবে আগের মতোই ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকা কেজি ও ডিম ১২০-১৩০ টাকা ডজনে বিক্রি হচ্ছে।

বর্ষা মৌসুমে বাজারে মাছের সরবরাহ কম হওয়ায় বাড়তি দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে। কাজলি, ট্যাংরা, চিংড়ি ৮০০-১২০০ টাকার কমে মেলে না। বাইলা মাছও এক থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি। তবে আকারভেদে চাষের রুই, কাতলা মাছের কেজি ৩০০-৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৫০০, চিংড়ি ৫০০-৮০০, তেলাপিয়া ও পাঙাশ ২২০ এবং কাচকি মাছ ৪০০-৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বেগুন ১০০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া টমেটো ৮০-১০০ টাকা, করলা ৮০-১০০ টাকার কমে মিলছে না। পটল, ঝিঙে, ধুন্দল ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসা ৫০ থেকে বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কচুরমুখী ও কাঁকরোল ৭০-৮০ টাকায়, সজনে ১২০-১৪০, ঢেঁড়স ৫০-৭০, কাঁচা পেঁপে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বোরো ধান ওঠার পর চালের দাম কমবে এমনটি সবাই আশা করলেও সেই আশায় গুড়েবালি হয়েছে। খুচরা চাল বিক্রেতারা বলছেন, কৃষকের ধান মিলমালিকদের গোডাউনে চলে গেছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা ইচ্ছেমতো চালের দাম বাড়াচ্ছেন। এ জন্য বাড়তি দরে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। মনজুর, রশিদ, সাগরসহ অন্যান্য কোম্পানির মিনিকেট চালের দাম বেড়ে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ডায়মন্ড, হরিণ, মোজাম্মেল কোম্পানির চাল আরও বেশি দামে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটাশ চালের দামও বেড়ে ৬২-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা চাল আগের মতোই ৫২-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সাখাওয়াত হোসেন/এমএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।