র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো সেই লিমনের বাবাকে মারধর

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝালকাঠি
প্রকাশিত: ০২:৪১ এএম, ২৬ জুলাই ২০২৫
বাবার সঙ্গে লিমন হোসেন/ছবি-সংগৃহীত

ঝালকাঠিতে র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন হোসেনের করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ তুলে নিতে অস্বীকার করায় বাবা তোফাজ্জেল হোসেনকে (৫৫) বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে প্রতিপক্ষ।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে জুমার নামাজের পর উপজেলার সাতুরিয়া ইঁদুরবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বিকেলে ভুক্তভোগী তোফাজ্জেল হোসেন রাজাপুর থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

তোফাজ্জেল হোসেন অভিযোগে উল্লেখ করেন, প্রতিবেশী ইব্রাহীম হাওলাদার ও আবদুল হাইয়ের সঙ্গে তাদের বিরোধ রয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হতেই তারা দুজনসহ চারজন তোফাজ্জেল হোসেনকে ঘিরে ধরেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৯ জনের নামে লিমন হোসেনের করা অভিযোগ তুলে নিতে তারা হুমকি দেন। এসময় তিনি মামলা তুলে নিতে না চাইলে আসামিরা তাকে বেধড়ক মারধর করেন।

তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‌‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার ছেলে লিমন হোসেনের করা অভিযোগ তুলে নিতে অস্বীকার করায় আমার ওপর হামলা করা হয়েছে। ইব্রাহীম হাওলাদারের নেতৃত্বে এর আগেও আমার ওপর হামলা হয়েছে। আমি থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার চাই।’

এ বিষয়ে সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রভাষক পঙ্গু লিমন হোসেন বলেন, ‘আমি এ হামলার বিচার চাই।’

অভিযুক্ত ইব্রাহীম হাওলাদার বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে লিমন প্রভাব খাটিয়ে এ মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের আটকের চেষ্টা চলছে।

এর আগে ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল লিমন হোসেনের পরিবারের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ জমিতে প্রবেশ করে ইব্রাহীম হাওলাদার ও আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে ছয়-সাতজন বাঁশ কাটার চেষ্টা করেন। এতে তোফাজ্জেল হোসেন বাধা দিলে তাকে পিটিয়ে আহত করেন আসামিরা। এ ঘটনায় লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় ঝালকাঠির আদালতে ইব্রাহীম হাওলাদারের দুই বছর ও আবদুল হাইয়ের ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়।

২০২৪ সালে একমাস কারাভোগ করে ইব্রাহিম হাওলাদার জামিনে বের হন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে লিমনের পরিবারকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সাতুরিয়ায় নিজের বাড়ির পাশে গুলিবিদ্ধ হন লিমন। বাড়ির পাশের মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে র‌্যাবের সদস্যরা তাকে ধরে পায়ে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। জীবন বাঁচাতে তার বাম পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়।

এ ঘটনার পর র‌্যাব লিমনসহ আটজনের নামে রাজাপুর থানায় দুটি মামলা করে। সেই মামলায় র‌্যাবের পক্ষে ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন অভিযুক্ত ইব্রাহিম হাওলাদার।

মো. আতিকুর রহমান/এসআর

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।