সালিশ বৈঠকে সাংবাদিককে শ্রমিকদল ও যুবদল নেতার হুমকি
ফরিদপুরের সালথায় সাংবাদিককে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কালাম বিশ্বাস ও যুবদলের নেতা দাবি করা বালাম দাই। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের সালথা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক যুগান্তর প্রতিনিধি শফিকুল ইসলামকে এভাবেই মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা।
এ ঘটনায় সালথা থানায় শনিবার রাতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শফিকুল ইসলাম। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত কালাম বিশ্বাস আগে সালথা উপজেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আর বালাম দাই নিজেকে যুবদল নেতা দাবি করে থানার দালালি ও শালিস বাণিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার নামে চুরি, চাঁদাবাজি, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তার বাবা ইউনুস বিশ্বাস একজন গ্রাম পুলিশ।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সালথা বাজারের বটতলায় শফিকুল ইসলামদের একটি দোকানঘর ভাড়া নেন আনোয়ার মোল্যার ছেলে লিয়াকত মোল্লা। এরপর ভাড়ার পরিবর্তে ওই দোকান ঘরে নিজেরাই ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিয়ে লিয়াকতকে ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে জানায় মালিক পক্ষ। তাকে নিয়মানুযায়ী তিনমাসের নোটিশও দেওয়া হয়। কিন্তু লিয়াকত মোল্লা দোকান ছাড়বেন না বলে জানালে শনিবার সালথা বাজার কমিটির সেক্রেটারির অফিসে বিষয়টি নিয়ে সালিশ বৈঠক বসে। ওই সালিশের একপর্যায়ে জামাল ওরফে বালাম দাই (৩১), কালাম বিশ্বাস (৪১), দেলোয়ার মাতুব্বর (৪০), সোহরাবসহ (৩২) আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে নিয়ে এসে এভাবেই হুমকি দিয়ে যান।

ভিডিওতে দেখা যায়, সালিশ বৈঠকের মধ্যে তাকে পাড়িয়ে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেন। বালাম দাই বলেন, ‘কোনো সাংবাদিক গুনার টাইম নাই, আমরা এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে বেড়াই। লিয়াকত মোল্যা তোদের দোকান ছাড়বে না, তুই যা পারিস তাই করে দেখা।’
আরও পড়ুন-
আঁধার ঘরে ক্ষুধা পেটে দিন কাটে বৃদ্ধ দম্পতির
১০১ টাকার ওষুধ ১৩০০ টাকায় কিনলো কুমেক হাসপাতাল
তিন মাস ধরে পানি না পেলেও বিল গুনছেন গ্রাহকরা
কালাম বিশ্বাস বলেন, ‘তোর মুখ খ্যাতলাইয়্যা দিবো।’
একথা বলে তেড়ে ওঠার পর শফিকুলের বড় ভাই দৈনিক নয়াদিগন্তের সালথা উপজেলা প্রতিনিধি মো. রেজাউল করিম (৩৫) এগিয়ে এলে তাকে মারপিট করার চেষ্টা করেন। এসময় সালথা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক সমকালের সালথা উপজেলা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলামসহ অন্যরা এগিয়ে এলে তারা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সালথা উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কালাম বিশ্বাস ও যুবদলের নেতা দাবিদার বালাম দাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম ও তার ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাই। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর এ ধরনের বর্বরোচিত হামলার চেষ্টা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য মারাত্মক হুমকি। সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম ও তার ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করছি।
এ বিষয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি কিন্তু এই মুহূর্তে দুর্গাপূজার ডিউটিতে বাইরে রয়েছি বলে বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারছি না। থানায় যেয়ে বিষয়টি দেখবো।
এন কে বি নয়ন/এফএ/এমএস