স্বস্তি ফিরছে খাগড়াছড়িতে
পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে স্বস্তি ফিরতে শুরু করছে। বুধবার (১ অক্টোবর) সকাল থেকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। খুলতে শুরু করেছে দোকানপাট। তবে এখনো জেলা সদর, পৌরসভা ও গুইমারায় ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে।
এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে দুর্গোৎসবের প্রতি সম্মান এবং প্রশাসনের আট দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসের প্রতি সম্মান জানিয়ে মঙ্গলবার রাত ১১টা থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত অবরোধ স্থগিত করে জুম্ম ছাত্র-জনতা।
আরও পড়ুন
- খাগড়াছড়িতে সেই শিক্ষার্থীর ধর্ষণের আলামত পায়নি মেডিকেল বোর্ড
- ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সড়ক অবরোধ স্থগিত করেছে জুম্ম ছাত্র জনতা
- ১৪৪ ধারা-অবরোধে স্থবির খাগড়াছড়ি, থমথমে গুইমারা
- খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় ৩ মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি আসকের
অবরোধ স্থগিতের পর খাগড়াছড়ি-ঢাকা, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটিসহ বিভিন্ন দূরপাল্লার সড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে। অনেকে দুর্গাপূজার ছুটিতে বাড়ি ফিরছেন। যারা আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে এসে আটকা পড়েছেন তারও গন্তব্যে ফিরছেন। শহরে বেড়েছে মানুষের উপস্থিতি। অচলাবস্থা কাটিয়ে স্বাভাবিক হচ্ছে শহরের পরিবেশ।
১৪৪ ধারা বলবৎ থাকায় খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় আছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জেলাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের যৌথ টহল অব্যাহত রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও প্রবেশপথে বসানো চেকপোস্টে বরাবরের মতো জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

খাগড়াছড়ি গুইমারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ধীরে ধীরে জনজীবন স্বাভাবিক হচ্ছে। যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।’
খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হাসান মারুফ বলেন, ‘১৪৪ ধারা জারি থাকলেও শারদীয় দুর্গোৎসবের কারণে আমরা মানুষের যাতায়াত বাধাগ্রস্ত করছি না। পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে শিগগির ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হতে পারে।’
এর আগে রোববার খাগড়াছড়ির গুইমারায় ১৪৪ ধারার মধ্যে দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিন পাহাড়ি যুবক নিহত হন। এ সময় সিন্দুকছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মাজহার হোসেন রাব্বানীসহ ১৩ জন সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিন পুলিশ আহত হন।
আরও পড়ুন
- খাগড়াছড়িতে নারী-শিশুদের ‘নাশকতামূলক কাজে’ বাধ্য করছে ইউপিডিএফ
- ১৪৪ ধারা বলবৎ, সতর্ক সেনাবাহিনী-বিজিবি
- খাগড়াছড়িতে সেনা-পুলিশসহ আহত অনেকে, তিন পাহাড়ি নিহত
এদিকে খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালায় মারমা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিক্ষোভ ও সহিংসতাকে কেন্দ্র করে গত রোববার গুইমারা সহিংসতার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে গুইমারায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার।
গত মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে ওই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওইদিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনরা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। পরদিন সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন যুবক শয়ন শীলকে (১৯) আটক করে পুলিশ। তাকে ছয়দিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মজিবুর রহমান ভূঁইয়া/আরএইচ/এএসএম