আওয়ামী লীগ নেতার জামিন

শেরপুরে জেলা জজসহ জড়িতদের অপসারণ দাবি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০৭:০১ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পালের জামিন ইস্যুতে জেলা জজ, পিপি ও জিপির অপসারণসহ ৮ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা।

সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে আদালতের প্রধান ফটক অবরোধ করে তারা কর্মসূচি পালন করে।

দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

তাদের দাবিগুলো হলো-

১) আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন কুমার পালকে সুপরিকল্পিতভাবে সেইফ এক্সিট দেওয়ায় বিচারক জহিরুল কবির, পিপি আব্দুল মান্নান ও জিপি মাহবুবুল আলম রাকিবকে তাদের পদ হতে অপসারণ করতে হবে।

২) যারা শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের সঙ্গে বেঈমানী করে মামলা বাণিজ্য করেছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে এবং যে রাজনৈতিক দলের নেতা মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তাকে দল থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

৩) শেরপুর আদালতে যারা আওয়ামী লীগের দোসরদের পক্ষ নিচ্ছে এবং চেয়ে চন্দনসহ অন্যান্য ফ্যাসিস্টদের জামিন দিয়ে পালাতে সহযোগিতা করছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৪) শহীদ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পরিবারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা প্রশাসককে সংবাদ সম্মেলন করে আশ্বস্ত করতে হবে।

৫) ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দ্রুত সেখান হতে অপসারণ করতে হবে।

৬) শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) শেষবারের মতো কড়া হুঁশিয়ারি দিতে হবে।

৭) নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলার বালু খেকোদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে।

৮) শেরপুরে আওয়ামী লীগের দোসররা কিভাবে ঘুরাফেরা করে, সেটার জন্য পুলিশসুপারসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

আরও পড়ুন:
শেরপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জামিনে মুক্ত, ছাত্রজনতার ক্ষোভ
ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আ’লীগ নেতা গ্রেফতার

সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় চন্দন কুমার পালের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ছয়টি মামলা হয়। পরে ভারতে পালানোর চেষ্টার সময় ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর বেনাপোল সীমান্তে আটক হয়ে তিনি প্রায় এক বছর কারাগারে ছিলেন।

চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত থেকে সব মামলায় জামিন পেলেও ফের গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর শেরপুর আদালত থেকে জামিন পান তিনি এবং কারামুক্তির পর এলাকা ছেড়ে চলে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।

এর জেরে জেলা বিএনপির সভাপতি ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুল মান্নানের ওপরও সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। পরে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অপপ্রচারের অভিযোগ করেন। পাল্টা হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংবাদ সম্মেলন করে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেয়, যার ধারাবাহিকতায় আজকের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

পরে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান দাবিগুলো শুনে বলেন, লিখিত অভিযোগ দিলে দাবিগুলো সরকারকে দ্রুতই জানানো হবে।

এদিকে পিপি আব্দুল মান্নান জানান, জামিনের এখতিয়ার সম্পূর্ণ আদালতের। এখানে পিপির করার কিছু নেই। আর এ জামিনে আমি বিরোধিতা করেছি।

মো. নাঈম ইসলাম/এনএইচআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।