পাবনায় আবারও স্পিডবোটে এসে ডাকাতি, সোনা ও নগদ টাকা লুট
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় স্পিডবোটে এসে নদীসংলগ্ন বাজারে কয়েকটি সোনার দোকান ও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার অষ্টমনিষা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনাপাড়ের নাকালিয়া বাজারে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওইদিন ডাকাত দল বাজারের ৪টি দোকান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, বুধবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে ১০-১৫ জনের সশস্ত্র একটি ডাকাত দল গুমানী নদী দিয়ে স্পিডবোটে এসে ভাঙ্গুড়ার অষ্টমনিষা বাজারে ঢুকে পড়ে। ডাকাতদের কাছে দোকানের তালা কাটার যন্ত্র দেখা গেছে। তারা এসে প্রথমেই বাজারের দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। এরপর তালা ভেঙে কয়েকটি সোনার দোকান লুট করে। পরে বাজারের পার্শ্ববর্তী ব্যবসায়ী রতন কর্মকারের বাড়িতে ডাকাতি করে।
ডাকাত দল ওই বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর ও লুটপাট চালায়। পরে আরেক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে ভোর চারটার দিকে স্পিডবোট নিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের দাবি, ডাকাতদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র ছিল। কিছুতেই তাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না। এজন্য আতঙ্কে কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি।
রতন জুয়েলার্সের মালিক রতন কর্মকারের দাবি, তার দোকান থেকে ডাকাতেরা সোনা ও পাঁচ লাখ টাকা এবং তার বাড়ি থেকে ১০ ভরি সোনা ও ১৫ লাখ টাকা লুট করে। এ ছাড়া মধু জুয়েলার্স, মা জুয়েলার্স ও আঁখি জুয়েলার্স থেকেও বেশ কিছু সোনার গহনা ও টাকা লুট করা হয়।
এ ব্যাপারে রতন কর্মকার জানান, ডাকাতেরা দোকানে লুটপাট শেষে তার বাড়িতে হানা দেয়। এরপর দরজা ভেঙে অস্ত্রের মুখে তার স্ত্রী-সন্তানকে জিম্মি করে মারধর শুরু করে। তিনি তিন তলায় গিয়ে লুকিয়ে কয়েকজন প্রতিবেশীকে ফোন দেন। কিন্তু অস্ত্রের ভয়ে কেউ আসেন না। এর মধ্যেই ডাকাতেরা তার বাড়িতে লুটপাট চালায়।
তপন জুয়েলার্সের মালিক তপন কর্মকার বলেন, আমার দোকানে কয়েক লাখ টাকা ও সোনার গহনা ছিল। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।
ব্যবসায়ী দীপক কর্মকার জানান, ডাকাতেরা তার বাড়িতেও ডাকাতির চেষ্টা করে। তবে ভেতরে কোনোভাবেই ঢুকতে না পেরে পরে চলে যায়।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তার আগেই ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টির তদন্তে থানা পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কাজ শুরু করেছে। দ্রুত ডাকাত দলকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
আলমগীর হোসাইন নাবিল/এএমএ