পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
অদক্ষতার কারণে কম বেতনের চাকরিতেও বেশি খরচে বিদেশে যান শ্রমিকরা
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে দক্ষ জনশক্তির প্রচণ্ড চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশের অদক্ষ শ্রমিকরা কম বেতনের চাকরির জন্য বেশি অর্থ খরচ করে বিদেশে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ১০ জন লোককে নেওয়া হবে, ১০ হাজার লোক আছে ওই চাকরিটা নেওয়ার জন্য। কারণ এখানে কোনো দক্ষতার প্রয়োজন হয় না। অথচ দক্ষ জনশক্তির প্রচণ্ড ডিমান্ড (চাহিদা) আছে সমস্ত পৃথিবীতে। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা দক্ষতা বলে মনে করি, আসলে সেটার তেমন কোনো ডিমান্ড নেই।
তিনি বলেন, বাজারের সঙ্গে একটা ইন্টারফেস তৈরি করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাজারে কী ধরনের স্কিলের ডিমান্ড আছে, সেই স্কিলটা তৈরি করা। আমরা গতানুগতিক করে যাচ্ছি। আমি সরকারের অংশ কাজেই দোষটা আমারও কিন্তু আংশিক। আমরা চেষ্টা করছি। আমরা কানাডা ও জাপানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি, ওখানকার কোনো একটি প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশে এসে তাদের ডিমান্ড অনুযায়ী ট্রেনিং দিক। আমরা একটা ট্রেনিং ইনস্টিটিউট তাদেরকে দিয়ে দেব।
স্কিলড ম্যানপাওয়ারের ডিমান্ড এবং বেতনও অনেক বেশি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেড় কোটি লোক দেশের বাহিরে আছেন। তার মধ্যে প্রায় এক কোটি কর্মী। আমাদের রেমিট্যান্সের ওপর আমাদের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু এই রেমিট্যান্স এই মানুষগুলোর কাছ থেকেই এর দ্বিগুণ হতে পারতো, তিনগুণ হতে পারতো যদি তারা আসলে সবাই স্কিলড হতো।
বিভিন্ন দেশের ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, জাপানি ভাষায় এন-ফোর স্তর পাস করতে পারলে তাদের জাপানে ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউটে ভর্তির সুযোগ হয়। ভর্তির পর সপ্তাহে ২৮ ঘণ্টা কাজ করে থাকা-খাওয়া ও পড়ালেখার খরচ বহন করেও দেশে টাকা পাঠানো সম্ভব, কারণ জাপানে বেতন অত্যন্ত বেশি।
তিনি উল্লেখ করেন, যে ছেলেটি আরবি বলতে পারে, সে মিডলইস্টে গেলে তার বেতন দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর ইংরেজি বলতে পারলে তার বেতন তিনগুণ হয়। তিনি উদাহরণ দেন, একই কাজ করেও ইংরেজি বলতে না পারায় ইন্ডিয়া থেকে যাওয়া এক শ্রমিকের বেতন এক-তৃতীয়াংশ হয়, কারণ তার বেতনের দুই গুণ ‘কফিলের’ পকেটে যায়।
মতবিনিময় সভায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও আইনশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসানের সভাপতিত্বে সভায় বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জিতু কবীর/কেএইচকে