রংপুরে মোস্তফা

নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন, ইউনূসের হাত রক্তে রঞ্জিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর
প্রকাশিত: ১১:৫৮ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা

জাতীয় পার্টির (জাপা) কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন একটি মেরুদণ্ডহীন কমিশন। আর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবের হাত আজ রক্তে রঞ্জিত।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে জাতীয় পার্টি কার্যালয়ে সংবিধান সংরক্ষণ ও গণতন্ত্র রক্ষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি এবং অঙ্গসহযোগী সংগঠন এ সভার আয়োজন করে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রংপুর মহানগর জাপার সভাপতি মোস্তফা বলেন, হিসাব করে দেখেন, এই ১৫ মাসে কত মানুষ মারা গিয়েছে। আপনারা গোপালগঞ্জে পাখির মতো গুলি করে মানুষ মেরেছেন, আপনারা নিরীহ মানুষকে গুলি করে মেরেছেন। আজকে যদি এই কথাগুলো আমরা বলতে চাই, তাহলে আমাদের বলা হয় রাষ্ট্রের বিপক্ষে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের যদি বাকশক্তি রুদ্ধ করেন, আমাদের যদি গলা টিপে ধরেন, তাহলে তো আর গণতন্ত্র থাকলো না।

রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক এ মেয়র আরও বলেন, আমরা সরকারের ভালো কাজে বাহবা দেবো, সাপোর্ট করবো আর খারাপ কাজে সমালোচনা করব—এটাই তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু গণতন্ত্রের যে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ, সেটা কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি না।

দেশের একটি সেক্টরও স্বাভাবিকভাবে চলছে না দাবি করে জাপার এ শীর্ষ নেতা বলেন, আজকে সচিবালয় চলছে না, বিচার বিভাগ চলছে না, নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন কমিশনে পরিণত হয়েছে। যার অধীনে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন কমিশন যদি একটা দলের কথায় আরেকটা দলকে ব্যান করতে চায়, তাকে না ডাকার জন্য সাহস পায়, তাহলে তো আর এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করতে পারি না। কিন্তু আমরা এখনো আশা ছাড়ি নাই।

দেশ এখন ‘মব’র দেশ হয়ে গেছে মন্তব্য করে মোস্তফা বলেন, জাতীয় পার্টির জন্ম হওয়ার পর থেকে শুধু ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনটা করেনি, বাকি সব নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করেছে। আমরা চাই একটা সুষ্ঠু পরিবেশ, একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ এবং সব দল যেন অংশগ্রহণ করতে পারে—তেমন একটি নির্বাচন আমরা চাই। আমরা চাই, প্রতিহিংসার অবসান হোক। প্রতিহিংসার রাজনীতি চলতে থাকলে দেশ কোনোদিন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে না।

জাতীয় পার্টিকে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতাকে, এই লাল সবুজের পতাকাকে লালন করি। আমরা এই স্বাধীনতাযুদ্ধকে মেনে চলি। স্বাধীনতার জন্য ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতাকে লালন ও ধারণ করেই জাতীয় পার্টি রাজনীতি করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, কিন্তু স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিরা এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমি একটা কথা বলছি—আমি বাঁচি আর মরি সেটা পরের বিষয়—আপনারা দেখবেন, সেইদিন বেশি দূরে নয়, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আর বিপক্ষের শক্তি—আরেকটা লড়াই আসন্ন। সেই লড়াইয়ে জাতীয় পার্টি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে এবং লড়াই করবে।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন লেবুর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এস.এম ইয়াসির।

জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ও রংপুর জেলার সদস্যসচিব হাজ্বী আব্দুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর মহানগরের সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেনসহ অন্যরা বক্তব্য দেন।

জিতু কবীর/এমকেআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।