ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নতুন ভবন নির্মাণের তিন বছরেও বাড়েনি শয্যা, সেবায় হিমশিম

রাজীবুল হাসান রাজীবুল হাসান ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)
প্রকাশিত: ১২:৩২ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

নানা সমস্যায় জর্জরিত কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণ ২০২২ সালে নতুন চারতলা ভবন নির্মাণ হলেও তিন বছরে শয্যা বাড়ানো হয়নি। এছাড়াও হাসপাতালে চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতির সংকটে রোগীরা সঠিক সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নতিকরণের লক্ষ্যে একটি নতুন চারতলা ভবনের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। নির্মাণ শেষে ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ভবনটি উদ্বোধন হলেও এখনো ১০০ শয্যা বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে প্রতিদিন স্থানীয়সহ দূরদূরান্ত থেকে বহির্বিভাগে ৫০০-৬০০ রোগী আসেন। এছাড়া জরুরি বিভাগে প্রতিদিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। ৫০ শয্যার হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ৮০-৯০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। ৫০ শয্যার বাইরে অতিরিক্ত রোগীদের তিনবেলা খাবার দেওয়ার বাজেট না থাকায় রোগীরা বাইরের খাবার খেতে হয়।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন ১৫ জন। এর মধ্যে দুজন বিশেষজ্ঞসহ ৪ জন চিকিৎসক প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত আছেন। ফলে বর্তমানে ১১ জন চিকিৎসক দিয়ে কার্যক্রম চলছে। এছাড়া অর্থোপেডিক, চর্ম ও যৌন, চক্ষু এবং নাক, কান ও গলা চিকিৎসকের পদ শূন্য আছে। রক্ত, ডায়াবেটিস পরীক্ষার যন্ত্র থাকলেও ব্যবহার করা হয় না। আলট্রাসনোগ্রামের মেশিন আছে কিন্তু মেশিন টেকনিশিয়ানের অভাবে অব্যবহৃত হয়ে আছে। এছাড়া হাসপাতালে ঔষধের স্বল্পতা আছে। ভর্তি রোগীদের ওষুধ দিতে পারলেও জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের চাহিদার ওষুধ দিতে দেওয়া হচ্ছে না।

জানা যায়, প্রতিমাসে হাসপাতালে বিদ্যুৎ বিল আসে ৪-৫ লাখ টাকা। এতে কয়েক মাসের বিল পরিশোধ না করায় বিদ্যুৎ বিভাগ কয়েক মাস আগে হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হলে কর্তৃপক্ষের অনুরোধে সংযোগ দিলেও এখনো ৪১ লাখ টাকা বিল বকেয়া।

jagonews24

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কিশোর কুমার ধর জানান, হাসপাতালটি কিশোরগঞ্জ জেলার মধ্য অতি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভৈরবের রোগীরা ছাড়াও আশেপাশের উপজেলার অসংখ্য রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। হাসপাতালটি ৫০ থেকে ১০০ শয্যায় উন্নতি করতে ভবন নির্মাণ করা হলেও বাস্তবে ১০০ শয্যা হয়নি। এ কারণেই ৫০ জন রোগীর বাইরে অতিরিক্ত রোগীদের খাবার দেওয়া যায় না, বাজেট নেই।

তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত বেড না থাকায় অতিরিক্ত রোগীদের ফ্লোরে রাখতে হয়। ২১ জনের মধ্য ১১ জন ডাক্তার কর্মরত আছেন। ৪ জন ডাক্তারের পোস্টিং হাসপাতালে থাকলেও তারা প্রেষণে ঢাকার হাসপাতালে কর্মরত। কিন্তু তারা বেতন নেয় এই হাসপাতাল থেকে।

তিনি বলেন, আমাদের ওষুধের স্বল্পতা আছে। বিভিন্ন যন্ত্রপাতিসহ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অভাব রয়েছে। ফলে সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়া যায় না। অর্থোপেডিক ও শিশু বিশেষজ্ঞ জরুরি, কিন্তু নেই। এসব বিষয় অবগত করে আমি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

এমএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।