বিরোধীদলের কোনো সমর্থককে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না: তারেক রহমান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৫৭ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতি পরিহার করে সমাধানের পথে হাঁটতে চায়। তিনি এ সময় প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে কোনো বাংলাদেশিকেই রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না, সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান।

তারেক রহমান বলেন, গত ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশ ‘একটি কালো মেঘের নিচে’ চাপা পড়ে ছিল। রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে মানুষের ওপর নেমে আসে নির্যাতন, গুম, মিথ্যা মামলা ও ভয়ভীতি। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও সর্বাধিক রক্ত ঝরেছে বিএনপির ঘরেই।

তিনি বলেন, শুধু বিএনপি নয়-ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, সাধারণ মানুষসহ নানান শ্রেণি-পেশার মানুষও ভয়ংকর পরিবেশের ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছে। মৌলিক মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা- সবই ছিল হুমকির মুখে।

বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৫ সাল থেকে তার কথা বলার অধিকার সম্পূর্ণভাবে দমন করা হয়েছিল। দেশের কোনো গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার বক্তব্য প্রকাশে ছিল কঠোর নিষেধাজ্ঞা।

তারপরও তিনি গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছেন বলে জানান।

তারেক রহমান বলেন, এই অন্ধকার সময়টিতে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ধৈর্য ও প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। মিথ্যা মামলা, কারাবাস ও রাজনৈতিকভাবে তাকে নিঃশেষের চেষ্টা আসলে গোটা দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন। তবুও খালেদা জিয়া গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে সরেননি।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার মা নিজ হাতে সহ্য করেছেন তার ছেলেকে জেলে নেওয়ার মানসিক যন্ত্রণা; আরেক ছেলেকে আমরা চিরতরে হারিয়েছি। দেশের হাজারো পরিবারের মতো আমাদের পরিবারও ছিল লক্ষ্যবস্তু।

তারেক রহমান বলেন, কষ্ট মানুষকে তিক্ত নয়, বরং মহান করে তোলে। খালেদা জিয়া তারই উদাহরণ। তিনি শিখিয়েছেন, অন্যায়ের শিকার হলেও প্রতিশোধ নয়, ন্যায় ও ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যৎ গড়ে। বিএনপি এখন প্রতিশোধ নয়, সমাধানের রাজনীতি চায়। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি- কোনো বাংলাদেশিকেই রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না, সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী।

মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে তিনি আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাগর-রুনি, সাজেদুল ইসলাম সুমনসহ নিপীড়নের শিকার অসংখ্য মানুষের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, এমন ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সে জন্য দায়মুক্তির সংস্কৃতি ভাঙা জরুরি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেও বিএনপি ভেঙে যায়নি; বরং সত্য, ন্যায়, জবাবদিহি ও আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকার আরও দৃঢ় হয়েছে। বিএনপি এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চায়, যেখানে প্রতিটি মানুষের কণ্ঠ, অধিকার ও জীবন মূল্যবান হবে। যেখানে মানবাধিকারই ভবিষ্যতের ভিত্তি।

কেএইচ/এএমএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।