পটুয়াখালী-৩
নুর-জামায়াত-স্বতন্ত্রকে কেন্দ্র করে বদলাচ্ছে ভোটের সমীকরণ
পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা–দশমিনা) আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার চিত্র।
বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে এই আসনে ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে একই আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অধ্যাপক মু. শাহ আলম মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ফলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নুরুল হক নুর, জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক মু. শাহ আলম এবং বিএনপির বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসান মামুন এই তিনজনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী মাঠে নতুন রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে ভোটের টানাপড়েনে জাতীয়তাবাদী ভোটব্যাংক বিভক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে যেতে পারেন জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মু. শাহ আলম। দীর্ঘদিনের শিক্ষকতা, এলাকায় সক্রিয় রাজনৈতিক পদচারণা এবং সংগঠনের সুসংগঠিত ভোটব্যাংক তার পক্ষে কাজ করতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরা।
তবে ইসলামপন্থি আটদলীয় জোট থেকে চূড়ান্তভাবে জামায়াত ব্যতীত অন্য কোনো দলকে প্রার্থী করা হলে এ পর্যন্ত তৈরি হওয়া সমীকরণ ভেঙে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে জামায়াতের প্রার্থীর জন্য তৈরি হওয়া সম্ভাব্য ‘সুযোগের জানালা’ হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কাও করছেন স্থানীয়রা।
পটুয়াখালী-৩ আসনে জামায়াত ইসলামী থেকে মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক শাহ আলম বলেন, গণতান্ত্রিক উপায়ে সবাই নির্বাচন করবেন এখানে বিএনপি কি করলো এবং গণ অধিকের পরিষদ কি করলো সেটা জামায়াত ইসলামের চিন্তা করে না। আমরা আমাদের সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি।
গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, জামাতের যে ভোট আছে এই আসনের তার চেয়ে চরমোনাইয়ের ভোট বেশি রয়েছে তবে এখনো তাদের জোটের কিছু হিসাব-নিকাশ আছে তারপর বলা যাবে।
বিএনপির কর্মীরা এখন কার হয়ে কাজ করবে এ প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা আজকেও ১২টি ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনায় বসেছি। তারা বলেছেন- হাসান মামুন আমাদের দুর্দিনে পাশে ছিলেন তার নেতৃত্বে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আমরা তার হয়ে নির্বাচনে কাজ করবো।
এ আসনে আরও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা মুফতি আবু বকর সিদ্দীক।
মাহমুদ হাসান রায়হান/এনএইচআর