মা কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মাশুল দিল হালিমা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশিত: ০১:৪৪ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মরদেহ উদ্ধারের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিশু হালিমা আক্তার (৩) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। হালিমার মা খাদিজা বেগম কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চাচা হেলাল মিয়া শিশুটিকে খুন করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো. আলমগীর হোসেন।

এ ঘটনায় হালিমার চাচা হেলাল মিয়া (২৬) ও তার আরেক সহযোগী রুবেল মিয়াকে (২২) আটক করেছে পুলিশ। হেলাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাদুঘর গ্রামের মুন্সিহাঁটি মহল্লার ফরিদ মিয়ার ছেলে ও রুবেল একই গ্রামের ভূইয়াপাড়া মহল্লার আরফুজ মিয়ার ছেলে। ইতোমধ্যে হেলাল ও রুবেলকে আসামি করে হালিমার মা খাদিজা বেগম সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেছেন। সেই মামলায় আটক হেলাল ও রুবেলকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

হেলাল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বাকীর করেছেন জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, হালিমা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি খুবই হৃদয়বিদারক। তার মরদেহ উদ্ধারের পরপরই আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করি। তদন্তের প্রধান বিষয় ছিল হালিমার মায়ের সঙ্গে কারো সম্পর্ক আছে কি না।

সেটি তদন্ত করতে গিয়েই আমরা জানতে পারি হালিমার মাকে তার চাচা হেলাল মিয়া মাস খানেক আগে কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন। এ নিয়ে দুই পরিবারের ঝগড়াও হয়েছে। এরপর থেকেই প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওঠে হেলাল। তখন থেকেই সে হালিমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত কয়েকদিন আগে হালিমাকে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে। কিন্তু পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।

jagonews

হেলাল জানিয়েছে, হালিমাকে হত্যার বিকল্প পরিকল্পনা হিসেবে সে তার সহযোগী রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে ৪/৫ দিন আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরির্দশন করে। ঘটনার দিন (২ ফেব্রুয়ারি) হালিমাকে কোলে করে হেলাল বাড়ির বাইরে নিয়ে যায়। পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে হালিমাকে এক প্যাকেট চিপস্ কিনে দিয়ে বাড়ি থেকে ৫০০ গজ দূরে একটি বহুতল ভবনের পাশে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হেলাল। আর এ হত্যাকাণ্ডের সময় রুবেল পাহারা দিয়েছিল। এ ঘটনায় রোববার রাতে রুবেলকেও তার বাড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ।

এর আগে গত শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ভাদুঘর গ্রামের ভূইয়াপাড়া মহল্লার একটি বহুতল ভবনের পাশ থেকে হালিমার মরদেহ উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। হালিমা ওই গ্রামের মুন্সিহাঁটি মহল্লার রাজমিস্ত্রি আমির হোসেনের মেয়ে। এদিন সকালে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় হালিমা।

সংবাদ সম্মেলনে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রেজাউল কবির, জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) আবু সাঈদ, জেলা বিশেষ শাখার ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহম্মেদ ও সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।

আজিজুল সঞ্চয়/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।