খবরে দেখি ত্রাণ দিচ্ছে, আমি অসহায় এখনও ত্রাণ পাইনি
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার দেশজুড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষের কাজকর্ম বন্ধ। ফলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দরিদ্র মানুষ। যারা দিনে আনে দিনে খায় তাদের মধ্যে খাদ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থায় সোমবার (১৮ মে) শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঋষিপাড়া এলাকার অন্তত ৫০ পরিবার ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে।
ত্রাণ না পাওয়া পরিবারগুলোর সদস্যরা জানান, পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছেন তারা। কিন্তু পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ দেয়া হলেও তাদের এলাকার কর্মহীন মানুষগুলো ত্রাণসহায়তা পায়নি। নড়িয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লতিফ ব্যাপারী তার নিজের লোকদের ত্রাণ ও নগত অর্থ দিয়েছেন।
তবে যারা ত্রাণের জন্য বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন তাদের দুইবার ত্রাণ দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন কাউন্সিলর লতিফ ব্যাপারী।
কাউন্সিলর লতিফ বলেন, আমি নড়িয়া পৌরসভা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। করনোকালে এই ওয়ার্ডে সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে প্রায় ৫৫০ জন মানুষকে ত্রাণ দিয়ে সহায়তা দিয়েছি। যারা আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন তাদের দুইবার ত্রাণ দেয়া হয়েছে। তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।
ত্রাণ না পাওয়া ঋষিপাড়া গ্রামের সাবিতা রানী বলেন, টিভিতে দেখি সরকার অনেক ত্রাণ দিচ্ছে। আমি অসহায় মানুষ কিন্তু এখনও কোনো ত্রাণ পাইনি। লতিফ কাউন্সিলর বেশ কয়েকবার আমার ভোটার আইডি কার্ড নিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ দেননি।
নরসুন্দর যুবরাজ বলেন, করোনা পরিস্থিতি শুরু হলে সরকারি নির্দেশে দোকান বন্ধ রাখি। এতে জমানো সব সম্বল শেষ হয়ে যায়। খাদ্যসঙ্কটে পড়ি। আমার দুই সন্তান প্রতিবন্ধী। তাদের নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। ত্রাণ পেলে পরিবার নিয়ে চলতে পারতাম। কিন্তু লতিফ কাউন্সিলর আমাকে কোনো ত্রাণ দিলেন না।
নড়িয়া পৌরসভার মেয়র শহীদুল ইসলাম বাবু রাড়ী বলেন, করোনা দুর্যোগের সময় প্রায় ছয় হাজার অসহায় ও গরিব মানুষকে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। আমার জানামতে পৌরসভায় যারা ত্রাণের আওতায় আছেন সবাই ত্রাণ পেয়েছেন। ওই এলাকার কিছু লোক লতিফ ব্যাপারীর বিরুদ্ধে এসব করাচ্ছেন।
এ বিষয়ে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তী রুপা রায় বলেন, আমরা প্রতি সপ্তাহে অসহায়দের ত্রাণ দিচ্ছি। এলাকার লোক সংখ্যার ভিত্তিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে। যদি কেউ ত্রাণ না পেয়ে থাকেন তাহলে আমার কাছে আইডি কার্ড নিয়ে আসলে ত্রাণের ব্যবস্থা করব।
মো. ছগির হোসেন/এএম/পিআর