চাকরি ছেড়ে কোয়েল খামার, মাসে আয় লাখ টাকা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে একটি এনজিওতে চাকরি নিয়েছিলেন পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নাঈম। এতে সংসারের খরচ মিটছিল না। পরে চাকরি ছেড়ে দেন। নিজে কিছু করতে ৬০০ কোয়েলের বাচ্চা সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন খামার।
২০১৮ সালে এই খামার শুরু করার পর তাকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে বর্তমানে তার খামারের তিনটি শেডে রয়েছে প্রায় ছয় হাজার কোয়েল পাখি। পাখিগুলো প্রতিদিন তিন হাজার ডিম দেয়। এ ডিম বিক্রি করে নাঈমের মাসে আয় হচ্ছে প্রায় লাখ টাকা।
কলাপাড়া পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুবক মাহবুবুল আলম নাঈম। ঢাকা আলিয়া মাদরাসা থেকে অনার্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে উদ্বুদ্ধ হয়ে চাকরি ছেড়ে খামার করার সিদ্ধান্ত নেন।
নাঈম প্রতিদিন তার খামার থেকে তিন হাজারের বেশি ডিম পান। প্রতি পিস ডিম পাইকারি বিক্রি করেন ৩ টাকা দরে। তবে এই ছয় হাজার পাখির পেছনে দৈনিক খরচ প্রায় ৪-৫ হাজার টাকা। সব খরচ মিটিয়েও মাসে তার আয় থাকে লাখ টাকার ওপরে।
মাহবুবুল আলম নাঈম জাগো নিউজকে বলেন, ডিম ও মাংসের চাহিদা বেশি থাকায় পরিবারের সহায়তায় চাকরি ছেড়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ায় স্বপ্নে কোয়েল খামার গড়ে তুলি। বর্তমানে আমার খামারে থাকা তিন হাজার কোয়েল পাখিই ডিম দেয়। বেশ ভালোই লাভবান হচ্ছে। অনেকেই আমার খামার ঘুরে দেখছেন। আমিও অনেক যুবককে কোয়েল খামার গড়ে তোলার পরামর্শ দিচ্ছি।
মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ইমরান হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘নাঈম ভাই একজন সফল কোয়েল খামারি। তার কাছ থেকে ১০০ কোয়েল পাখির বাচ্চা সংগ্রহ করেছি। আশা করছি আমিও লাভবান হতে পারবো।’ নাঈমের পরামর্শে ২০০ কোয়েল পাখি নিয়ে খামার শুরু করেছেন বিডিক্লিন কলাপাড়া টিমের সদস্য রাকায়েত আহসান। তিনি বলেন, ‘কোয়েল লালন-পালনে তেমন কষ্ট নেই। বর্তমানে আমার ৫০টি কোয়েল ডিম দিচ্ছে।’
কলাপাড়া হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. জোনায়েদ খান লেলিন জানান, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, জিংক, ফলেট, ভিটামিন-এ, ই, ডি ও কোলস্টেরলসমৃদ্ধ কোয়েল পাখির ডিম। মানবদেহের এসব চাহিদা পূরণে কোয়েলের ডিম অপরিহার্য। বিশেষ করে অপুষ্টিকর শিশুদের বেশি বেশি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেই।
কলাপাড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কমল চন্দ্র শীল বলেন, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিস থেকে নাঈমকে সবধরনের সুযোগ-সুবিধা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তার মতো আরও অনেক যুবককে সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলা হচ্ছে। যারা এ ধরনের খামারি হতে আগ্রহী তাদের আমরা সবধরনের সহযোগিতা করবো।
এসআর/জিকেএস