ঘুস নেওয়ার সময় অফিস সহকারী

৫০০ টাকার নিচে অফ টাইমে কোনো কাজ হবে না

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ওয়াজ মাহফিলের অনুমতির কাগজের জন্য নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক অফিস সহকারীর টাকা নেওয়ার ভিডিও ফাঁস হয়েছে।

ঘুস গ্রহণকারী ওই ব্যক্তির নাম আব্দুস সাদিক। তিনি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেএম শাখায় অফিস সহকারী পদে ১১ বছর ধরে কর্মরত।

ফাঁস হওয়া ওই ভিডিওতে আব্দুস সাদিককে বলতে শোনা যায়, ‘৫০০ টাকার কমে অফ টাইমে কোনো কাজ হবে না। আপনি যদি পেপারে উঠে দেন একথা, রাজি আছি। আমরা চাচ্ছি ওটা। কারণ আমাদের ইমিডিয়েটলি বদলি নেওয়ার কথা এই শাখা থেকে। ভালো সিদ্ধান্ত দিবে আমাদের। দ্বাদশ নির্বাচনে সেখানে বসে খাবো কয়টা দিন।’

৫০০ টাকার নিচে অফ টাইমে কোনো কাজ হবে না

এসময় অপর দিক থেকে ভুক্তভোগী ব্যক্তি ২০০ টাকা দেওয়ার কথা বললে তিনি বলেন, ২০০ টাকায় কোনো কাজ হবে না।

পরে ভুক্তভোগী ব্যক্তি আবারও জিজ্ঞাসা করেন, ‘কত টাকা হলে কাজ হবে। উত্তরে অফিস সহকারী বলেন, ৫০০ টাকা দিলে কাজ হবে। রাত ১০টা হলেও তোর ওয়াজ মাহফিলের অনুমতি দিয়ে তারপর বাড়ি যাবো।’

৫০০ টাকার নিচে অফ টাইমে কোনো কাজ হবে না

অফিস সহকারী আরও বলেন, ‘ওখানে ৫০০ টাকা নেবে, আমি নেবো ১০০ টাকা। তাড়াতাড়ি দে, টাকা দৌড়ে যেয়া কাজ হচ্ছে।’

পরে ভুক্তভোগী ব্যক্তি ৫০০ টাকা দিলে তিনি আরও ১০০ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না চাইলে অফিস সহকারী আব্দুস সাদিক বলেন, ‘তাহলে তোর কাজও হবে না, ক্যান্টিন পর্যন্ত কাগজ নিগি থুইবে।’

৫০০ টাকার নিচে অফ টাইমে কোনো কাজ হবে না

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী আব্দুল মালেক বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েকদিন ধরে ওয়াজ মাহফিলের অনুমতির কাগজটি ঘুসের জন্য ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে কাগজটির জন্য অনেকেই ঘুরছেন। কিন্তু উনি কোনো সময় ১০০০, ১৫০০, আবার কখনো ৫০০ টাকা চান। আমি এলেও আমার কাছে দুদিন টাকা চান। প্রথমে ভিডিও করিনি। পরে দেখলাম উনি মহৎ একটা কাজেও ঘুস ননেবেন। এজন্য ভিডিও ট করি। আসা রাখি কর্তৃপক্ষ এটার ব্যবস্থা নেবে।’

জানতে চাইলে অভিযুক্ত আব্দুস সাদিক বলেন, ‘আমি ঘুস নেইনি। উনিতো নিজেই ভিডিও করেছেন। উনি নিজে টাকা দিয়ে ভিডিও করেছেন যেন পরে চাঁদা দাবি করতে পারেন। পরেতো ভাইরাল করে দিলো।’

৫০০ টাকার নিচে অফ টাইমে কোনো কাজ হবে না

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষের সঙ্গে কথা বলতে কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাজু আহম্মেদ/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।