পেঁয়াজের বীজ কিনে প্রতারণার শিকার ১৯ কৃষক

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় ৪ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজের বীজ কিনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন কৃষকরা। জমির কিছু কিছু অংশে চারা উঠলেও মারা গেছে।
এ নিয়ে সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ১৯ কৃষক।
লিখিত অভিযোগে কৃষকরা জানান, বালিয়াকান্দি পেঁয়াজ চাষের উপযোগী এলাকা। বহু কৃষক বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের ভীমনগর গ্রামের ইউসুফ বিশ্বাসের ছেলে সজীব বিশ্বাসের কাছ থেকে বীজ কেনেন। বীজ বিক্রির সময় সজীব ১ নম্বর ‘লাল তীর কিং’ বীজ বলে জানান। কৃষকরা তার কথা বিশ্বাস করে প্রতি কেজি বীজ ৪ হাজার ২০০ টাকা দরে কেনেন।
বপনের পর বুঝতে পারেন বীজগুলো ভারতীয় কোনো কোম্পানির। বীজ ভালো অঙ্কুরিত হয়নি। যতটুকু হয়েছিল তাও মারা যায়।
অভিযোগকারী কৃষকরা জানান, চাষাবাদ করে তাদের সংসার চলে। চাষের সময় ঋণসহ ধার দেনা করতে হয়। ফলন পাওয়ার পর সেই ধারদেনা শোধ করেন। কিন্তু এবার ঋণ শোধ করতে পারবেন না। কারণ পেঁয়াজ বীজে তারা প্রতারিত হয়েছেন। বিষয়টি বিক্রেতাকে জানালে তিনি টালবাহানা করছেন। এমনকি এ বিষয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করারও হুমকি দিয়েছেন।
তারা আরও জানান, সজীব বিশ্বাস একজন প্রতারক। কৃষকদের কাছ থেকে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে তা ব্যবহার করে সরকারের ভর্তুকি মূল্যের পাওয়ারটিলার নিয়ে বিক্রি করেছেন। দুই নম্বর পেঁয়াজ বীজ বিক্রি করায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফলে এ মৌসুম তাদের অভাব অনটনে পার করতে হবে। প্রতারণার বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সজিব বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে বারবার কল দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়েও তার সন্ধান মেলেনি।
ইউএনও রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, অভিযোগের বিষয়টি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিবুল হাসান ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিবুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ভেজাল সার, বীজ ও কীটনাশকের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই অভিযান চলছে। এরইমধ্যে অনেক ব্যবসায়ীকে সতর্ক করাসহ জরিমানা করা হয়েছে। কৃষকদের সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, ১৯ কৃষকের দেওয়া অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রুবেলুর রহমান/এসজে/এমএস