থাপ্পড় মারায় যৌনকর্মীকে গলা কেটে হত্যা, যুবক গ্রেফতার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০২:৫২ পিএম, ২১ মার্চ ২০২৩

ময়মনসিংহ নগরীর ছোট বাজারের নিরালা রেস্ট হাইজ থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রাকিবুল ইসলাম রাকিব (২৩) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ওই তরুণী একজন ভাসমান যৌনকর্মী ছিলেন। টাকা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে রাকিব মিয়াকে থাপ্পড় মারেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই যৌনকর্মীর গলা কাটার পর হাতের কবজির রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন রাকিব।

গ্রেফতার রাকিব মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার নতুন চরচাষী গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঞা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আসামি রাকিব পড়াশোনার পাশাপাশি সমাজসেবা অফিসে আউট সোর্সিংয়ের কাজ করতেন। ময়মনসিংহের ভালুকায় কাজের জন্য গত ১৪ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে আগারগাঁও অফিস থেকে রওনা দেন। সেখান থেকে মিরপুর সেহড়া পাড়া বাসস্ট্যান্ড যান। পরে সেহড়া পাড়া ফুটওয়ার ব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় এক যৌনকর্মী রাকিবকে ডাক দেন। তখন রাকিব তার সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা চুক্তি করে ময়মনসিংহে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। এতে ওই যৌনকর্মী ময়মনসিংহে যেতে রাজি হয়।

পরে সেখান থেকে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড হয়ে বাসযোগে ময়মনসিংহে আসেন তারা। আসার পর নগরীর ছোট বাজার এলাকার নিরালা রেস্ট হাউজে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে চারদিন থাকবেন বলে ২০৯ নম্বর রুম ভাড়া নেন।

পরদিন ১৫ মার্চ সকাল ১০টার দিকে রাকিব এক হাজার টাকা দেন এবং বাকি চার হাজার দেবেন না বলে জানান। এতে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই যৌনকর্মী রাকিবের গালে থাপ্পড় মারেন। এতে রাকিব ক্ষিপ্ত বলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। বিকাশ থেকে টাকা তুলতে যাচ্ছেন নাম করে তিনি নিচে গিয়ে ১০০ টাকা দিয়ে একটি চাকু কেনেন। পরে রুমে এসে ওই যৌনকর্মীকে বাথরুমে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন।

মৃত্যু নিশ্চিত করতে রাকিব ওই যৌনকর্মীর দুই হাতের কবজির রগ কেটে মুখ চাকু দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করেন। তারপর হোটেল রুমের রক্ত পরিষ্কার করে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে চলে যান।

এভাবে দুইদিন রুম তালা বন্ধ দেখে রেস্ট হাউজ কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলা পর সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহাযতায় ১৯ মার্চ রাকিবকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ বলেন, ওই যৌনকর্মীর পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়ায় যায়নি। তার পরিচয় নিশ্চিতে পুলিশ কাজ কাজ করছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত করে ফ্রিজিং করে রাখা হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে রাকিব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান তিনি।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।