সৌদির দেওয়া দুম্মার মাংস ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ

জামালপুর সদর উপজেলায় অসহায় ও দুস্থদের জন্য সৌদি সরকারের দেওয়া দুম্মার মাংস জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার (২২ মার্চ) বিকেল থেকে জেলাজুড়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রতিবছর অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য বাংলাদেশে দুম্বার মাংস পাঠায় সৌদি সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ মার্চ জামালপুর সদর উপজেলায় ৩৭ কার্টন দুম্বার মাংস আসে। প্রতিটি কার্টনে প্রায় ২৫ কেজি করে মাংস ছিল। ওই রাতেই তা তালিকা আকারে বিতরণ করা হয়।
মাংস নেওয়ার তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন- রহিমা মোজাফফর এতিমখানার পক্ষে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের বাড়ির কেয়ারটেকার হারুন দুই কার্টন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দুই কার্টন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা এক কার্টন ও ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ এক কার্টন, দুম্মার মাংস পরিবহনের শ্রমিক দুই কার্টন ও ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদের এক কার্টন।
তালিকায় থাকা রহিমা মোজাফফর নামে কোনো এতিমখানা উপজেলায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে খুপিবাড়ি এলাকায় ছইম উদ্দিন হাফেজিয়া ও ইসলামী কিন্ডারগার্টেন মাদরাসা নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে প্রধানফটকে জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের নাম রয়েছে। সেখানকার এক সহকারী শিক্ষক বলেন, তারা ১০ পোটলা মাংস পেয়েছেন। সেখানে প্রায় ২০ কেজির মতো মাংস ছিল। তাছাড়া তারা কিছুই জানেন না তিনি।
এদিকে এতিমখানার পক্ষে উপজেলা পরিষদ থেকে মাংস গ্রহণ করেছিলেন সংসদ সদস্যের বাড়ির কেয়ারটেকার হারুন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাংসগুলো ওই মাদরাসায় দেওয়া হয়েছে। তবে ২০ কেজি মাংস মাদরাসা পেয়েছে- এমন প্রশ্নে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একইভাবে কথা হয় তালিকায় থাকা একটি মাদরাসার শিক্ষকের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক কার্টন মাংস পাননি তিনি। দুই পোটলায় মাত্র পাঁচ কেজি মাংস দেওয়া হয়েছে। যাদের নামে মাংস বরাদ্দ হয়েছিল তারা সঠিকভাবে মাংস পায়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জামালপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আরিফুর রহমান বলেন, মাংসগুলো দরিদ্র মানুষ, ইতিমখানা ও মাদরাসায় বিতরণের নির্দেশনা ছিল। সেই অনুযায়ী প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে একটি করে কার্টন দেওয়া হয়।
মাংস বিতরণে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মাংস বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মো. নাসিম উদ্দিন/বিএ