শিবগঞ্জে ২৪ বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে আ.লীগ-বিএনপি
দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ-বিএনপির একাধিক নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তৃণমূলের নেতারা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্থানীয় নেতাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ছড়াছড়িতে নেতাকর্মীরা বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। ভোটের দিন তারা কাকে ভোট দেবেন এ নিয়েও পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। আর বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে দলের হাইকমান্ডও।
গত বুধবার ছিল দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ওই সময় ১২টি ইউনিয়নে ৭১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৭৮ জন, পুরুষ সদস্য পদে ৪৮৯ জন, এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৪৮ জন মনোনয়ন পত্র জমা দেন।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত ১২ জন, বিএনপির ১২ জন, জাতীয় পার্টি ৬ জন এবং জামায়াত ৫টি ইউনিয়নে প্রার্থী দিয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের ১৪ জন এবং বিএনপির ১০ জন বিদ্রোহী হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাট্টা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আব্দুস সামাদ ও শফি মাহমুদ সুলতান হাসান। কিচকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোমিনুল ইসলাম লিটন চৌধুরী, সামছুল ইসলাম সরকার এবং বিএনপির বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান আফসার আলী। মাঝিহট্ট ইউনিয়নে বিএনপি বিদ্রোহী মির্জা গোলাম হাফিজ।
বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে সাইদুর রহমান ও বিহার ইউনিয়নে মোনায়েম হোসেন ইকবাল আ.লীগের বিদ্রোহী হয়েছেন। মোকামতলা ইউপি’র আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মালেক আকন্দ ও এনামুল হক। বিএনপি বিদ্রোহী আ: লতিফ সরকার।
রায়নগর ইউনিয়নে আ.লীগের বিদ্রোহী সাইফুল ইসলাম, বিএনপি বিদ্রোহী সালাউদ্দিন ও হাসিম উদ্দিন স্বপন। পিরব ইউপির আ.লীগ বিদ্রোহী হাজী মোজাম্মেল হক ও আব্দুল কুদ্দুস সরকার।
শিবগঞ্জ ইউনিয়নে বিএনপি বিদ্রোহী আবু বক্কর সিদ্দিক ও আতিকুর রহমান সোহেল। আটমূল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী বেলাল হোসেন, বিএনপি বিদ্রোহী মোজাফফর হোসেন। দেউলি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সাজ্জাত হোসেন সরকার ও আব্দুল হাই প্রধান, বিএনপি বিদ্রোহী সিরাজুল ইসলাম, নবাব আলী মন্ডল ও মোতাহার হোসেন। সৈয়দপুর ইউপির বিএনপি বিদ্রোহী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন তৌফিক।
বিহার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বিদ্রোহী প্রার্থী মোনায়েম হোসেন ইকবাল জানান, দীর্ঘদিন ধরে দল করার পরও মূল্যায়ন না করায় নিজে প্রার্থী হয়েছি।
আটমূল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে সভাপতি বিদ্রোহী প্রার্থী বেলাল হোসেন জানান, তৃণমূলের ১৮ জন ওয়ার্ড সভাপতি-সম্পাদকের মধ্যে ১৭ জন এবং উপজেলা কমিটির সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৯ জন আমার পক্ষে মতামত দিলেও কেন্দ্র আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। দল ভালো মনে করে ব্যবস্থা নিলে নিবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক এমদাদ জানান, আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিবগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম তাজুল ইসলাম জানান, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লিমন বাসার/এমএএস/এবিএস