কাশিমপুর কারাগারে বন্দিদের ঈদ: ছিল বিশেষ খাবার, নতুন পোশাক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গাজীপুর
প্রকাশিত: ১১:১৯ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০২৩

কারাগারের ঈদ আনন্দ আর সবার মতো নয়। এখানে প্রিয়জনদের ছাড়াই কাটাতে হয় ঈদ। তারপরও নিয়ম-নীতি মেনে কারা কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করে বন্দিদের কিছুটা হলেও আনন্দ দিতে। এরই ধারাবাহিকতায় গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদের দিন বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে কারাগারের অসচ্ছল বন্দিদের দেওয়া হয়েছে নতুন লুঙ্গি। আর নারী বন্দিরা পেয়েছেন নতুন শাড়ি। আবার কোনো কোনো বন্দিদের স্বজনরা এসেছিলেন কারাগারে। কেউ কেউ সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন বাসায় রান্না করা খাবার।

কারাগারের প্রধান ফটকে দায়িত্বে থাকা কারারক্ষীরা সেই স্বজনদের ব্যাগ ও খাবার তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করতে দেন।

কারা কর্মকর্তারা বলছেন, ভেতরে বিশেষ ব্যবস্থা থাকলেও স্বজনরা যেহেতু খাবার নিয়ে এসেছেন, তাই তাদের খাবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। তাদের সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: কারাগার থেকে বন্দির হুমকি, ১০ লাখ টাকা ঘুস দাবির অভিযোগ স্ত্রীর

jagonews24

ঈদের দিন কাশিমপুর কারাগারে ছয় বিদেশি নারী বন্দিসহ সব বন্দিদের উন্নত খাবার দেওয়া হয়। এছাড়া কাশিমপুরের নারী কারাগার বাদে প্রতিটি কারাগারে বন্দিদের জন্য হয়েছে আলাদা ঈদের জামাত।

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, তার কারাগারে প্রায় আড়াই হাজার বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০০ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এখানে ঈদের আগের দিন ১০০ অসহায় বন্দিকে লুঙ্গি দেওয়া হয়েছে। এ কারাগারের ভেতরে বন্দিদের জন্য ঈদের নামাজের ২১টি জামাত হয়।

আরও পড়ুন: কাশিমপুর কারাগারে ধর্ষণ মামলার আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

বন্দিদের খাবারের তালিকায় ছিল সকালে পায়েস, মুড়ি, দুপুরে মাংস, পোলাও, সালাদ, কোল্ড ড্রিংকস এবং রাতে সাদা ভাত, রুই মাছ ও মুড়িঘণ্ট।

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১-এর সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, তার কারাগারে জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ এক হাজার ২৪১ জন বন্দি রয়েছেন। এছাড়া এখানে বন্দিরে মধ্যে ১০৪ জন ফাঁসি, তিন শতাধিক যাবজ্জীবনের আসামি রয়েছেন। এই কারাগারে বন্দিদের জন্য ঈদের তিনটি জামাত হয়।

jagonews24

কারাগারে পার্ট-১-এ বন্দিদের খাবারের তালিকায় ছিল সকালে পায়েস-মুড়ি, দুপুরে মাংস, পোলাও, সালাদ, পান সুপারি, কোল্ড ড্রিংকস। আর রাতে ছিল সাদা ভাত, আলুর দম, রুই মাছ।

কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২-এর সুপার মো. আমিরুল ইসলাম জানান, তার কারাগারে মোট বন্দি দুই হাজারের ওপরে। তাদের মধ্যে শতাধিক ফাঁসি ও চার শতাধিক যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রয়েছেন। এখানে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার তিন শতাধিক আসামি বন্দি রয়েছেন।

এই কারাগারে বন্দিদের জন্য ঈদের ছয়টি জামাত হয়েছে। এছাড়া বন্দিদের খাবারের তালিকায় ছিল সকালে পায়েস-মুড়ি, দুপুরে মাংস, পোলাও, পান সুপারি, কোল্ড ড্রিংকস এবং রাতে সাদা ভাত, আলুর দম, রুই মাছ ও মুড়িঘণ্ট।

আরও পড়ুন: কাশিমপুর কারাগারে বিশেষ খাবার, ছিল গান-বাজনারও আয়োজন

কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের জেল সুপার মো. ওবায়দুর রহমান জানান, এখানে ৫শতর মতো বন্দি রয়েছেন। এছাড়া এ কারাগারের ডে কেয়ার সেন্টারে বন্দিরে সঙ্গে আসা ৩৭ জন শিশু রয়েছে। বন্দিদের মধ্যে বিমানবন্দরে মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়া ছয়জন বিদেশি নারী ছাড়াও ফাঁসির আসামি রয়েছেন ৩১ জন। এদিন শিশুদের অন্য খাবারের পাশাপাশি চকলেট ও চিপস দেওয়া হয়েছে।

নারী কারাগারে খাবারের তালিকায় ছিল সকালে পায়েস-মুড়ি, দুপুরে মাংস-পোলাও, ডিম, ক্লোল্ড ড্রিংকস, পান সুপারি, সালাদ ও মিষ্টি এবং রাতে সাদা ভাত, আলুর দম ও মাছ।

মো. আমিনুল ইসলাম/জেডএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।