রাস্তার বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারও মানুষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০১:৩৬ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২৩

সামান্য বৃষ্টিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গৌড়দিয়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার ৫০০মিটারের কাঁচা সড়কটি। গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবার কোনো গাড়ি। এমনকি শ্মশান বা গোরস্থানে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। কাঁদা মাড়িয়েই স্কুল-কলেজে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটি মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে কাদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তান আমলে তৎকালীন চেয়ারম্যান মরহুম গোলাম আলী খান স্থানীয়দের চলাচলে এই কাঁচা সড়কটি নির্মাণ করেন। স্বাধীনতার এত বছর পরও সংস্কার করা হয়নি রাস্তাটি। জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের পর আর তাদের দেখা মেলে না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই এলাকায় প্রায় ৭৫ ভাগ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসবাস। সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার, প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে কাঁচা রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

jagonews24

আরও পড়ুন: ২০ মাসের কাজ শেষ হয়নি ৪ বছরেও, দুর্ভোগ চরমে

স্থানীয় বাসিন্দা সুশীল মালো জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান সোহাগ খানের দাদা মরহুম গোলাম আলী খান বহু বছর আগে এই কাঁচা রাস্তাটি নির্মাণ করে দেন। সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও পাশের মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি নিতে হয়। এই রাস্তা দিয়েই কৃষি পণ্য বাজারজাত করা হয়। আমাদের এ কষ্ট কবে দূর হবে তার কোনো ঠিক নেই।

স্থানীয় হাই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক গণপতি চ্যাটার্জী জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জরুরি সেবার কোনো গাড়ি বা যেকোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। হিন্দু বা মুসলিম কেউ মারা গেলে কাঁদার কারণে সৎকার, দাফন-কাফনে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অতি প্রাচীন রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি।

ওই এলাকার বাসিন্দা অনুপ সূত্রধর জাগো নিউজকে বলেন, গৌড়দিয়া গ্রামের শেষ মাথায় কাঁচা সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি সালথা উপজেলার কাছেই। বৃষ্টির দিনে রাস্তাটি ব্যবহারের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

jagonews24

এ বিষয়ে আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল হাসান খান সোহাগ জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তাটি অনেক পুরাতন, আমার দাদা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় রাস্তাটি নির্মাণ করেন। রাস্তাটি পাকাকরণে আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করবো।

আরও পড়ুন: জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তি, বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

এ ব্যাপারে সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর বলেন, আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন প্রকল্প দিয়ে রাস্তাটি পাকাকরণের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।

এ বিষয়ে সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হবে।

এন কে বি নয়ন/জেএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।