নিখোঁজ মেয়েকে ফিরে পেতে বাবা-মায়ের আকুতি
খালার সেবার জন্য মাদরাসাছাত্রী শিলা বেগমকে (১৫) ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে যান সৎ মামা। এরপর তাকে আর ফেরত দেননি। শিলার পরিবারকে জানানো হয় হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে সে। ছয় মাসেও সন্ধান মেলেনি তার।
শিলা বেগম কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকার অটোরিকশাচালক আশরাফ উদ্দিনের মেয়ে। সে স্থানীয় ঘোড়াকান্দা হাফসা মাদরাসার ছাত্রী। সন্তানের খোঁজ না পেয়ে ১১ মে মামা ও খালাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ আদালতে মামলা করেছেন তার মা রুনা বেগম। ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৫ মার্চ সকালে মাদরাসা যাওয়ার পথে শিলা বেগমকে মামা শাপলা মিয়া ঢাকায় নেওয়ার কথা বলে গাড়িতে ওঠান। গাড়িতে থাকা অবস্থায় শিলার মা রুনা বেগমকে বলা হয় খালা চম্পা বেগম ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার সেবাযত্ন করতে শিলাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
১৮ মার্চ শিলার মাকে জানানো হয় সে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ খবর শুনে মা রুনা ও বাবা আশরাফ উদ্দিন দ্রুত ঢাকার শিশু হাসপাতালে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে মেয়েকে না পেয়ে রুনা ভাই ও বোন চম্পাকে চাপ দিলেও তার খোঁজ দিতে পারেননি। পরে শেরে বাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রুনা। পরবর্তীতে কিশোরগঞ্জ আদালতে মামলা করেন। মামলাটি এখন পুলিশ তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন: তিন মাস ধরে নিখোঁজ কিশোরী, ফিরে পেতে বাবা-মায়ের আকুতি
মা রুনা বেগম বলেন, ছয় মাস হয়ে গেছে আমার মেয়ের কোনো সন্ধান পাইনি। সে বেঁচে আছে কিনা মরে গেছে জানি না। যদি বেঁচে থাকে তাহলে আমার মেয়ে ফিরে আসুক। যদি মরে যায় তাহলে অন্তত তার কবরে মাটি দিতে চাই। আমার সৎ ভাই ষড়যন্ত্র করে কোথায় নিয়ে গেছে আমি জানি না। পুলিশ, র্যাবও এখন পর্যন্ত কোনো খবর দিতে পারছে না। পুলিশ বলছে তারা চেষ্টা করছে। আমার মেয়েকে ফেরত চাই।
রিকশাচালক বাবা আশরাফ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ছয়টা মাস আমার মেয়েটা নিখোঁজ। তার কোনো সন্ধান পাচ্ছি না। আমার মেয়ের সন্ধান পেতে অনেক জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করছি। অনেক টাকা পয়সা খরচ করছি কিন্ত মেয়ের কোনো সন্ধান পাচ্ছি না। আমি গরীব মানুষ রিকশা চালিয়ে সংসার চালাই। কাজ কর্ম বন্ধ করে মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি কিন্ত কোনো সুফল পাচ্ছি না।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভৈরব থানার উপ-পরিদর্শক মো. আলমগীর জানান, মামলার পর বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে আমি হিমশিম খাচ্ছি। ঘটনাটি ঢাকায় হওয়ায় আমাদের সন্ধান পেতে দেরি হচ্ছে। এর মধ্য কয়েকবার মামলার তদন্তে ঢাকায় গিয়েছি কিন্তু কোন সন্ধান পায়নি। তবে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মামা পলাতক রয়েছেন। তাকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে পাওয়া গেলে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর সন্ধান পাওয়া সহজ হতো। আমরা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চেষ্টা করছি মেয়েটিকে উদ্ধার করতে।
জেএস/জিকেএস