‘মদ্যপ’ অবস্থায় কাউন্সিলর গ্রেফতার, যুবলীগ থেকে বহিষ্কার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৫:২০ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গ্রেফতার জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলন

যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর ও জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনকে ‘মদ্যপ’ অবস্থায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে বিজ্ঞপ্তিটি ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই জাহিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগীয়) শামীম আল সাইফুল সোহাগ।

জাহিদ হোসেন মিলন যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তার বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।

যুবলীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যুবলীগ একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন। এ সংগঠনের ভাবমূর্তি বজায় রাখার দায়িত্ব সবার। জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রমাণ রয়েছে। যা সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ন ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট করেছে। এ কারণে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নির্দেশে জাহিদ হোসেন মিলনকে সংগঠন থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হলো।

বিজ্ঞপ্তিতে গঠনতন্ত্র পরিপন্থি ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে বলা হলেও সুনির্দিষ্টভাবে কোনো অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

‘মদ্যপ’ অবস্থায় কাউন্সিলর গ্রেফতার, যুবলীগ থেকে বহিষ্কার

এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগীয়) শামীম আল সাইফুল সোহাগ বলেন, ‘সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে যশোর জেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক পদ থেকে জাহিদ হোসেন মিলনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল সাময়িক বহিষ্কারের ওই চিঠিতে সই করেছেন।’

স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার রাতে যশোর শহরের পালবাড়ি মোড়ে নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনসহ চারজনকে ‘মদ্যপ’ অবস্থায় গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাতেই যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেফতার অপর তিনজন হলেন শহরের টালিখোলা এলাকার শেখ দস্তগীর হোসেন (৪৪), কদমতলা এলাকার শফিকুল ইসলাম (৩৭) ও টালিখোলা এলাকার মারুফুজ্জামান (৩৯)। তারা কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন মিলনের সহযোগী।

জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাতে পৌনে ৮টার দিকে স্থানীয়দের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে, যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকার একটি ভবনের কক্ষে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় নিজেদের মধ্যে গোলযোগ করছেন। এরপর পুলিশ সেখানে হাজির হয়ে পৌর কাউন্সিলর জাহিদ হোসেনসহ তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করে।

জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ আছে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হলে দুবাই চলে যান তিনি। নাগালের বাইরে থাকায় তখন গ্রেফতার করতে পারেনি যশোর পুলিশ। দুবাই থেকে দেশে ফেরার পথে জাহিদকে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের পুরাতন কসবা কাজীপাড়া এলাকার যুবলীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম ওরফে সোহাগকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। অভিযোগ রয়েছে, ওই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জাহিদ হোসেন। ওই মামলায় আটক এক আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে মিলনের নাম উঠে আসে। এছাড়া একাধিক মামলা আছে তার বিরুদ্ধে।

মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।