শেয়ারবাজারে লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার ঘরে নামলো
দেশের শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন থামলেও লেনদেনের গতি কমার ধারা অব্যাহত রয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে।
তবে লেনদেন কমে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। এতে প্রায় তিন মাসের মধ্যে সব থেকে কম লেনদেনের ঘটনা ঘটলো।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরতপন হয়। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ৬৮টির স্থান হয় দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমে ৩০৬টির। আর ২৩টির দাম অপরিবর্তিত থাকে। অর্থাৎ দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় ৪ দশমিক ৫০ গুণ বেশি প্রতিষ্ঠান ছিল।
অন্যভাবে বলা যায়, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়। চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেও শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুর দিকে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যায়। তবে লেনদেনের শেষদিকে দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
আরও পড়ুন
শেয়ারবাজারে কারসাজি: ক্রিকেটার সাকিবের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন পেছালো
শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন, লেনদেন নেমেছে ৫০০ কোটির ঘরে
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৩৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১০১টির। আর ৬১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৪২টির দাম কমেছে এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৬৩টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৮টির দাম কমেছে এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫১টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৭টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৭২ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৫২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৬৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৪৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৭৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ৩০ জুনের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সামিট এলায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৪ লাখ টাকার। ১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী পেপার, স্যালভো কেমিক্যাল, ওরিয়ন ইনফিউশন, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ এবং রবি।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৯টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
এমএএস/ইএ/এমএস