বিশ্বে খাদ্যের চাহিদা ৬০ শতাংশ বাড়বে, কর্মসংস্থানে বড় সুযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:২০ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত

২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক খাদ্যের চাহিদা প্রায় ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক। এতে ২০৫০ সালের মধ্যে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি হতে পারে, যা কৃষি খাতে বিপুল কর্মসংস্থানের দ্বার খুলে দেবে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় ‘এগ্রিকানেক্ট উদ্যোগ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) সভাপতি আলভারো লারিও।

২৫ কোটি ক্ষুদ্র কৃষকের উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ

বিশ্বব্যাংক জানায়, আগামী এক দশকে ১.২ বিলিয়ন তরুণ উন্নয়নশীল দেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে ৪০ শতাংশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫ কোটি ক্ষুদ্র কৃষকের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে সহায়তা করবে আইএফএডি, যারা অন্তত ৭ কোটি ক্ষুদ্র কৃষক ও খাদ্য উৎপাদককে সহায়তা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

‘এগ্রিকানেক্ট’ নতুন এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো, ক্ষুদ্র কৃষকদের জীবিকা রূপান্তর, কৃষি ব্যবসায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা।

এই প্রচেষ্টা বিশ্বব্যাংক, আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও ইন্টার-আমেরিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের যৌথ সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হবে।

‘গ্রামীণ অঞ্চল হবে প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র’

আইএফএডি সভাপতি লারিও বলেন, আমরা ক্ষুদ্র কৃষকদের আয় বৃদ্ধি, ফলন উন্নয়ন এবং বাজারে সহজ প্রবেশাধিকারের ওপর জোর দিচ্ছি। গ্রামীণ এলাকাগুলোকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করাই আমাদের লক্ষ্য।

গত পাঁচ দশক ধরে ইফাদ বিশ্বের সবচেয়ে নাজুক গ্রামীণ অঞ্চলে বিনিয়োগ করছে। ২০২২–২০২৪ সালের প্রকল্পে অংশ নেওয়া কৃষকরা গড়ে ৩৪ শতাংশ আয় বৃদ্ধি, ৩৫ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ৩৪ শতাংশ বাজারে প্রবেশাধিকার পেয়েছেন।

বেসরকারি খাতের অংশীদারত্ব

২০১৯–২০২৩ সালে ইফাদের ৭০ শতাংশ প্রকল্পে স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যুক্ত ছিল। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য সরাসরি ঋণ ও ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের অর্থনৈতিক সুযোগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানো হয়েছে।

তরুণ ও প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি

ইফাদ এখন সবুজ কর্মসংস্থান, ডিজিটাল উদ্ভাবন, কৃষিভিত্তিক উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে, যাতে তরুণ প্রজন্ম কৃষিতে যুক্ত হতে আগ্রহী হয়।

কৃষি প্রবৃদ্ধি মানেই দারিদ্র্য হ্রাস

বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য হ্রাসে অন্য খাতের তুলনায় ২ থেকে ৩ গুণ বেশি কার্যকর। বর্তমানে বিশ্বের ৮০ শতাংশ দরিদ্র মানুষ গ্রামীণ এলাকায় বাস করে, যাদের উন্নয়নেই বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই হতে পারে। শুধু আফ্রিকার কৃষি ব্যবসা খাতের বাজারই ২০৩০ সালের মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।

এমওএস/এসএনআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।