শর্ত সাপেক্ষে ভারতীয় সুতা আমদানির অনুমতি পেলেন কারখানার মালিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩৭ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২৩

পোশাক রপ্তানিকারকদের বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে শর্ত সাপেক্ষে আংশিক চালানে ভারত থেকে সুতা আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। গত রোববার (৮ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

আদেশে বলা হয়, বৈধ বন্ডেড ওয়্যারহাউজ লাইসেন্সধারী রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শর্তসাপেক্ষে এ সুবিধা ভোগ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাদের ব্যাক-টু-ব্যাক লেটার অফ ক্রেডিটের (এলসি) মাধ্যমে সুতা আমদানি করতে হবে এবং কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট অফিস দ্বারা জারি করা বার্ষিক আমদানি এনটাইটেলমেন্ট অনুসরণ করতে হবে। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অন্যান্য শর্তাদির মধ্যে রয়েছে-বন্ড কমিশনারেট থেকে প্রাপ্ত বৈধ বন্ড লাইসেন্সের বিপরীতে লাইসেন্সের মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে সুতা আমদানিযোগ্য হবে, বন্ড কমিশনারেট কর্তৃক নির্ধারিত বার্ষিক আমদানি প্রাপ্যতার ভিত্তিতে আমদানি করা, পণ্যের শুল্কায়নকালে ওজন নিশ্চিত করা, দৈবচয়নের ভিত্তিতে পণ্যের কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করা, ইউডির বিপরীতে আমদানি সমন্বয়যোগ্য করা।

আরও পড়ুন>>> রেলপথে ভারতে পণ্য রপ্তানির সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ

এছাড়া রপ্তানিকারককে আমদানি তথ্য বেনাপোল কাস্টম হাউস কর্তৃক একটি নির্দিষ্ট ছকে বন্ড কমিশনারেট এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে তাৎক্ষণিকভাবে ই-মেইলে জানাতে হবে। বন্ড কমিশনারেট প্রাপ্ত তথ্যসমূহের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বন্ডারের বন্ডেড গুদামে পণ্য ইন বন্ড কার্যক্রম সম্পাদিত হয়েছে কি না এবং পাশ বইয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয় যাচাই করবে।

আমদানি-রপ্তানি বিষয়ে কাস্টম হাউজ, বেনাপোল কর্তৃক প্রেরিত তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক দলিলাদি যাচাই করবে। কোনো পরিলক্ষিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর এ বিষয়ে বন্ড কমিশনারেট প্রতি মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (কাস্টমস রপ্তানি ও বন্ড শাখায়) প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক আমদানি-রপ্তানি তথ্য সম্বলিত একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করবে। প্রতিবেদনের সঙ্গে এর সফট কপি প্রেরণ করবে।

গতকাল সোমবার বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) সোমবার এক চিঠির মাধ্যমে তাদের সদস্যদের এ সুবিধার কথা জানায়। আগে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধার আওতায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি করতে পারলেও আংশিক চালান করতে পারতো না।

আরও পড়ুন >>> আখাউড়া দিয়ে আমদানি হবে আলু-সুতা ছাড়া ভুটানের সব পণ্য

রপ্তানিকারকরা বলছেন, একটি আংশিক চালান একজন আমদানিকারককে একাধিক ডেলিভারিতে আমদানিকরা পণ্য গ্রহণ করতে সহায়তা করে। এর আগে এটি শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে অনুমোদিত ছিল। পোশাক ও তোয়ালে রপ্তানিকারকরা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সব স্থলবন্দরের মধ্য দিয়ে বন্ডেড ওয়্যারহাউজ সুবিধার আওতায় তুলা, সুতা ও কাপড়সহ কাঁচামাল আমদানি ও আংশিক চালানের অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

যদিও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) পোশাক প্রস্তুতকারকদের আবেদনের বিরোধিতা করে। তারা জানান, চালানের মাধ্যমে একটি এলসির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি চালান সঞ্চালিত হবে এবং অতিরিক্ত পরিমাণে পণ্য ফাঁকি দিয়ে দেশে প্রবেশ করবে, যা স্থানীয় মিলগুলির জন্য একটি অসম প্রতিযোগিতা তৈরি করতে পারে।

বিজিএমইএ তার সদস্যদের দেওয়া চিঠিতে সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আপনাদের সবার অবগতির জন্য অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা কাস্টমস স্টেশনের মাধ্যমে সুতা আমদানির ক্ষেত্রে পার্শিয়াল শিপমেন্টের (আংশিক চালান) জটিলতা নিরসন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ‘ক’ আদেশ জারি করেছে।

আরও পড়ুন>>> বন্দর থেকে যেভাবে খালাস হয় আমদানিপণ্য

তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ‘খ’ আদেশের ‘চ’ শর্তের কারণে একাধিক চালানের মাধ্যমে সুতা আমদানি করার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা ছিল এবং একটি চালানের মাধ্যমে সুতা আমদানি করতে হতো। যার ফলে সুতা আমদানির ক্ষেত্রে নানাবিধ জটিলতা দেখা দেয়। সুতা আমদানি ও আংশিক চালানের জটিলতা নিরসনের জন্য বিজিএমইএ থেকে দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ জানানো হয়।

তিনি আরও বলেন, আদেশ জারির ফলে বেনাপোল ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা কাস্টম স্টেশনের মাধ্যমে সুতা আমদানি ও আংশিক চালানের জটিলতা পরিহার করে দ্রুততার সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে।

এসএম/এমআইএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।