সাড়া মিলছে না মোবাইলে শেয়ার লেনদেন


প্রকাশিত: ০৭:১২ এএম, ০৭ মে ২০১৬

পুঁজিবাজারে গতি ফিরাতে এবং বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মোবাইলে শেয়ার লেনদেন কার্যক্রম চালু করেছে। এ ব্যবস্থা চালুর ইতোমধ্যে দুই মাস পার হলেও এ পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করেছেন মাত্র ১ হাজার ৫২৭ জন। আর লেনদেন করেছেন মাত্র ৪৭২ জন। ফলে বাজারে গতি ফেরাতে এই ব্যবস্থা চালু হলেও তাতে বিনিয়োগকারীদের সাড়া মিলছে না বলে না মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি বছর ৬ মার্চ মোবাইল ফোনে লেনদেনের কার্যক্রম শুরু করে ডিএসই। প্রায় দুই মাসে মোবাইল লেনদেনের জন্য মাত্র ১ হাজার ৫২৭ জন রেজিস্ট্রিভূক্ত হয়েছেন। এরমধ্যে ডিএসই ইনভেস্টর মাত্র ৩৭৭ জন, মোবাইল ট্রেডার (সরাসরি যেসব বিনিয়োগকারী শেয়ার লেনদেন করেছে) মাত্র ৪৭২ জন এবং ডিএসই মোবাইল ভিআইপি ৬৭৮ জন। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত লগ ইন করেছে মাত্র ৩০৬ জন। প্রায় ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীর মধ্যে এ পর্যন্ত যারা মোবাইল লেনদেনে যুক্ত হয়েছে তা খুবই সামান্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে মোবাইল লেনদেন সুবিধা চালুর সময় ডিএসইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথম পর্যায়ে মাত্র এক লাখ বিনিয়োগকারীকে এ সুবিধা দেবে ডিএসই। এই সুবিধা পেতে হলে বিনিয়োগকারীকে ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড নিতে হবে। একজন বিনিয়োগকারী বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে মোবাইলের মাধ্যমে শেয়ার কেনা-বেচা করতে পারবেন।

ডিএসই জানায়, ব্রোকারেজ হাউজের চাহিদা মোতাবেক ব্যবহারকারীর সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা হবে। তারা ইচ্ছে মত গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে পারবে। প্রথম পর্যায়ে এর কোন ফি নির্ধারণ করা হয়নি। তবে পরে ফি নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়।

জানা গেছে, ডিএসই-মোবাইল নামে যে লেনদেন প্রক্রিয়া ডিএসই চালু করেছে তা তিন ধরনের সংস্করণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি ব্রোকার হাউজগুলোর জন্য এবং বাকি দুটি বিনিয়োগকারীদের জন্য রাখা হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা যে দুটি ভার্সন ব্যবহার করতে পারবেন তার মধ্যে একটি হচ্ছে ডিএসই-মোবাইল ভিআইপি। এটি দিয়ে সরাসরি ট্রেড করা যাবে না। বিনিয়োগকারী মোবাইলে শুধু তার পোর্টফোলিও দেখতে পারবে। অন্যটি হচ্ছে ডিএসই-মোবাইল ট্রেডার। এই ভার্সন ব্যবহার করে বিনিয়োগকারী নিজে ট্রেড করতে পারবেন।
তবে, কোনো বিনিয়োগকারী বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে ট্রেড অফার করলে ব্রোকারেজ হাউজের ট্রেডার সেই আদেশ বাতিল করতে পারেন। কিন্তু বাজার দরে আদেশ দিলে তা বাতিল করার ক্ষমতা ট্রেডারের থাকে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে গতি ফিরানোর লক্ষ্যেই ঢাক ঢোল পিটিয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডিএসই মোবাইল লেনদেন চালু করেছে। অথচ বিভিন্ন ইস্যুতে দিন দিন বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। যদিও এক্সপোজার লিমিট ইস্যু সমাধানের পর সামান্য ইতিবাচক ধারা বাজারে লক্ষ্য করা গেছে। তবে মোবাইল লেনদেনে উল্লেখযোগ্য সাড়া মেলিনি বলে মনে করছেন তারা।

ডিএসইর সদস্য একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, এখনও পর্যন্ত সব ব্রোকারেজ হাউজে মোবাইল লেনদেন চালু হয়নি। হাতে গোনা কয়েকটি হাউজে মোবাইল লেনদেন চালু করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের তেমন সাড়া না পাওয়ায় ব্রোকার হাউজগুলোও মোবাইল লেনদেন নিয়ে আগ্রহ নেই।

মানুম নামে এক বিনিয়োগকারীর কাছে মোবাইলে শেয়ার লেনদেনের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যে হাউজে লেনদেন করি তারা সেবাটি এখনো চালু করে নাই। এছাড়াও এটি কিভাবে আমরা পরিচালনা করবো তারও কোনো প্রশিক্ষণ আমাদের দেওয়া হয় নাই।   

এ সম্পর্কে ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তামান পরিচালক শাকিল রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, একটি সেবা চালু হলে তা আস্তে আস্তে মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়। ডিএসইর মোবাইলে শেয়ার লেনদেন কার্যক্রমের ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।

এসআই/এমএমজেড/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।