প্রাথমিকে ১০২১৯ শিক্ষক পদে আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর, ফি ১০০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৬ এএম, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ধাপে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ছয়টি বিভাগের বিদ্যালয়গুলোতে ১০ হাজার ২১৯টি পদ রয়েছে। বিভাগগুলো হলো—রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ।

সহকারী শিক্ষক পদে অনলাইনে আবেদন শুরু হবে আগামী ৮ নভেম্বর (শনিবার), যা চলবে ২১ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এতে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা।

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়সসীমা
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদটি ১৩তম গ্রেড। জাতীয় বেতনস্কেল-২০১৫ অনুযায়ী এ পদের বেতন ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা।

সহকারী শিক্ষক পদটিতে আবেদন করতে ৩০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে প্রার্থীর ন্যূনতম বয়স হতে হবে ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স হবে ৩২ বছর।

প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির তথ্যমতে, প্রার্থীকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ (৪ স্কেলে ন্যূনতম ২.২৫ ও ৫ স্কেলে ন্যূনতম ২.৮) স্নাতক বা স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি অর্জন করতে হবে।

তবে শিক্ষাজীবনের কোনো স্তরে তৃতীয় বিভাগ অথবা সমমানের জিপিএ অথবা তৃতীয় শ্রেণি অথবা সমমানের সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না।

আবেদনকারীর জন্য আরও যেসব শর্ত
বিবাহিত নারী প্রার্থীরা আবেদনে তাদের স্বামী অথবা পিতার স্থায়ী ঠিকানার যে কোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন। তবে এ দুটি স্থায়ী ঠিকানার মধ্যে তিনি যেটি আবেদনে উল্লেখ করবেন, তার প্রার্থীতা সেই উপজেলা/শিক্ষা থানার জন্য বিবেচিত হবে।

অসত্য/ভুয়া তথ্য সংবলিত/ত্রুটিপূর্ণ/অসম্পূর্ণ আবেদনপত্র কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে বাতিল বলে গণ্য হবে। প্রার্থী কর্তৃক দাখিলকৃত/প্রদত্ত কোনো তথ্য বা কাগজপত্র নিয়োগ কার্যক্রম চলাকালে যে কোনো পর্যায়ে বা নিয়োগপ্রাপ্তির পরও অসত্য/ভুয়া প্রমাণিত হলে তার দরখাস্ত/নির্বাচন/নিয়োগ বাতিল করা হবে এবং মিথ্যা/ভুয়া তথ্য সরবরাহ করার জন্য তার বিরুদ্ধে আইনগত/প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা/শিক্ষা থানাভিত্তিক নিয়োগ করা হবে। প্রার্থী যে উপজেলা/ শিক্ষা থানার স্থায়ী বাসিন্দা তিনি সে উপজেলা/শিক্ষা থানার শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিবেচিত হবেন। আবেদনে নিজ জেলা, থানা/উপজেলা ভুল করলে তার প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে।

নির্বাচিত প্রার্থীকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫ অনুযায়ী নিজ উপজেলা/শিক্ষা থানায় চাকরি করতে হবে। তার বদলি নিজ উপজেলা/শিক্ষা থানার বিদ্যালয়সমূহের মধ্যে সীমিত থাকবে।

ধূমপানসহ যে কোনো ধরনের মাদক গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তাদের আবেদন করার প্রয়োজন নেই বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যাবে যেভাবে
এদিকে রাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও তা বৃহস্পতিবারের (৬ নভেম্বর) জাতীয় পত্রিকায় পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বৃহস্পতিবার পাওয়া যাবে। বুধবার আমরা সব প্রস্তুত করে পত্রিকা অফিসে পাঠিয়েছি। তবে রাত ১২টার পর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও বিজ্ঞপ্তিটি পাওয়া যাচ্ছে।

jagonews24

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো শিক্ষক সংকটে ধুঁকছে। প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য। আবার প্রায় ৩২ হাজার সহকারী শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। তাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হলে সহকারী শিক্ষকের আরও ৩২ হাজার পদ শূন্য হবে।

jagonews24

তবে নানা জটিলতায় শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছিল না। নারী, মুক্তিযোদ্ধাসহ ৬০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি ছেঁটে ফেলতে আগের বিধিমালাটি বাতিল করা হয়। এরপর গত ২৮ আগস্ট ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫’ প্রকাশ করা হয়।

নতুন এ বিধিমালায় সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টি করা হয়। এ নিয়ে বিধিমালা প্রকাশের পরই বিতর্ক শুরু হয়। ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন দল, ধর্মীয় সংগঠনসহ বিভিন্ন পক্ষ তীব্র বিরোধিতা শুরু করে। এতে বাধ্য হয়ে বিধিমালাটি সংশোধন করা হয়। সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা পদ বাতিল করে ২ নভেম্বর সংশোধিত বিধিমালা প্রকাশ করা হয়। এতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে সব বাধা কেটে যায়।

সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার পদ্ধতি
নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা হবে চারটি বিষয়ে। সেগুলো হলো- বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান, সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি)। এ চারটি বিষয়ে মোট ৯০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।

বাংলা ও ইংরেজিতে ২৫ নম্বর করে মোট ৫০ নম্বর এবং গণিত ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান এবং সাধারণ জ্ঞানে (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) ২০ নম্বর করে মোট ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নির্বাচিত প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। মৌখিক পরীক্ষা হবে ১০ নম্বরের।

এদিকে ৯০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় পাস নম্বর (মোট নম্বরের ৫০ শতাংশ) হবে ৪৫ নম্বর। আর মৌখিক পরীক্ষায় পাস নম্বর (১০ এর মধ্যে ৫০ শতাংশ হিসাবে) হবে ৫ নম্বর। লিখিত পরীক্ষায় ৯০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। মৌখিক পরীক্ষার জন্য সময় নির্ধারিত নয়।

এএএইচ/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।