‘এই দেশে আর কাজ করবো না’

গতকাল টাঙ্গাইলের অনুষ্ঠানে যেতে না পারা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন পরীমনি। আজ (২৬ জানুয়ারি) তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলো। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রথম মুক্তি পাওয়া সিনেমার প্রচারেও যেতে পারেননি তিনি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন এই ঢালিউড তারকা।
টাঙ্গাইলের বিষয়টা কী?
আগের রাতে আমাকে বলা হলো নিরাপত্তার ঘাটতি আছে, তাই অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। আমি শকড্। আমাদের দেশে এরকম ঘটনা কেন হবে? আমি খুব আতঙ্কিত! আমাদের শিল্পীদের কাজে বাধা দেওয়া হবে কেন? সারা পৃথিবীতে বড় বড় তারকারা শোরুম উদ্বোধন করেন। সেখানে বাধা দেওয়ার কী আছে? কোথায় আছি আমরা? কেমন আছি? ইন্ডাস্ট্রি কোথায় আছে? আমাদের অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
নতুন কাজের অগ্রগতি কী?
আর নতুন কাজ। যেগুলো করছিলাম… কালকের কাজ আজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, নতুন কাজ কীভাবে করবো? বিদেশে কাজ করবো। এই দেশে আর কাজ করবো না চিন্তা করছি। এই দেশে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হয় না। এই দেশে কাজ করে কী লাভ? এসব সিম্পল কাজে যদি বাধা দেওয়া হয়, তাহলে তো আমি ভেঙে যাব।
কলকাতার সিনেমাটার প্রতিক্রিয়া কেমন?
কলকাতায় যেতে পারিনি, আমার কেমন লাগছে বুঝতে পারছেন। কলকাতায় প্রথম সিনেমা অথচ সেখানে আমি নাই, এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। একটা সিনেমা মুক্তিতে যতখানি আনন্দ হওয়ার কথা, তার থেকে বেশি দুঃখিত আমি। কলকাতার সবাই যেভাবে আমাকে গ্রহণ করেছে, আমার প্রথম সিনেমা মুক্তিতে ওদের মিডিয়া থেকে শুরু করে হল মালিকরা, সেটার মধ্যে আমি নাই! চিন্তা করতে পারছি না।
কী করবেন এখন?
দুইটা বাচ্চা নিয়ে নিরিবিলি থাকতে চাই। দিনশেষে আমার তো সামলাতে হয়। আমার তো চৌদ্দগোষ্ঠীতে কেউ নাই। আমি এই দেশে আর কাজ করবো না। কোনো প্রচারণায় যেতে পারবো না, শুটিংয়ে বাধা দেবে, করব না! এটা কোনো কথা নয়। মন উঠে যাচ্ছে আমার। কাজ করলাম অথচ কোনো প্রচারণায় যেতে পারবো না! কোনো হল ভিজিটে যেতে পারবো না, পাবলিকলি যেতে পারবো না, আমি আসলে কী করবো? আমার কাজটা কী? এই জীবন তো আমরা চাইনি! এই দেশ আমরা চাইনি। কেন হচ্ছে, কারা করছে, খুব স্বল্প সংখ্যক লোক এসব ঘটাচ্ছে। বৃহত্তর গোষ্ঠী থাকতে, জনশক্তি থাকতে কীভাবে, কেন ঘটাতে দিচ্ছি আমরা। তাহলে কি আমরা ব্যর্থ? একা একা আমি কতক্ষণ কথা বলবো?
ব্যর্থ বলছেন কেন?
আমরা তো ভালো কিছুর জন্য সবাই লড়েছিলাম। আমি হয়তো মাঠপর্যায়ে লড়তে পারিনি, কিন্তু আমাদের তো স্বপ্ন ছিল। দিনশেষে ভালোটাই চাই। এটা কেমন ভালো চাইলাম আমরা? কিছুদিনের মধ্যে তো আমরা ধ্বংস হয়ে যাব। কাজ না থাকলে শিল্পীরা হারিয়ে যাবে। শিল্পীদের ব্যাপারটা তো অন্যরকম। অন্দোলন করছে, সব বন্ধ করে দিক। টান মারছে সবকিছু নিয়ে, মারুক। বাংলাদেশে কিছু হবে না। উপদেষ্টা হয়ে… নাম বলতে চাই না, নাম বললেই তো বলবে আমার মুখ খারাপ।
গত রাতের স্ট্যাটাসের সঙ্গে গ্রেফতারি পরোয়ানার কোনো যোগসূত্র আছে?
আজ আদালতে যাওয়ার কথা ছিল, যেতে পারিনি। এর আগেও একবার যেতে পারিনি, নানুর অনুষ্ঠান ছিল। আজ শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাজির হতে পারিনি। আমার আইনজীবীকে জানিয়েছি। পরপর দুবার আদালতে যেতে পারিনি। আজ আমার অবশ্যই যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু শরীর অনেক খারাপ। অসুস্থ থাকলে তো কিছু করার নেই। আদালতে যেতে কোনো আপত্তি নেই, মাতৃত্বকালীন সময়ে গিয়েছি।
এমআই/আরএমডি/এমএমএফ/জেআইএম