প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবায় দরকার কার্যকর টেকসই ব্যবস্থাপনা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২৬ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
টেকসই স্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা

আয়ক্ষয় রোধের মাধ্যমে দারিদ্র্য পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবার প্রসারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেছেন, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন কার্যকর, টেকসই ব্যবস্থাপনা। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহের চাপ মানুষের দারিদ্র্য নিরসনের অন্যতম প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

রোববার (২৭ এপ্রিল) পিকেএসএফ ভবনে ‘টেকসই স্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা করেন। সভায় জাতীয় পর্যায়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি, সহযোগী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ও পিকেএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, পিকেএসএফ টেকসইভাবে মানুষের আয়বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসন এবং দারিদ্র্য-পরবর্তী উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয়। কিন্তু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে তার চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে মানুষের নিজের পকেট থেকে যে পরিমাণ ব্যয় করতে হয়, তা তাদের আয়ক্ষয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশব্যাপী প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে, পিকেএসএফ পূর্ববর্তী বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত স্বাস্ব্যসেবা সংক্রান্ত কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেছে। এরই অংশ হিসেবে আজকের আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন
দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে জনপ্রতি পুষ্টি গ্রহণের হার কমেছে)https://www.jagonews24.com/economy/news/998735

স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. আহমেদ এহসানূর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যসেবাকে রাজনৈতিক অঙ্গীকারের অংশ করতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। সরকারকে আইন প্রণয়ন করে এ অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আইনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে রাষ্ট্র নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কী ভূমিকা নেবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, বর্তমানে তিন বছরের শিশুও স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছে; ৩০-৩৫ বছর বয়সী মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে; এগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য অশনিসংকেত। এর জন্য দায়ী অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচরণ এবং মাদকের অপব্যবহার। এ সমস্যা সমাধানে স্কুলভিত্তিক সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম জরুরি, যা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যবান্ধব সমাজ গঠনে সহায়ক হবে।

ওয়াটারএইডের আঞ্চলিক পরিচালক ড. খায়রুল ইসলাম বলেন, বিপর্যয় সৃষ্টিকারী অসুস্থতা দরিদ্র মানুষকে আবারও দারিদ্র্যের চক্রে ফেলে দেয়। বর্তমানে বাংলাদেশে ব্যক্তিগত খরচে স্বাস্থ্যব্যয়ের হার ৭৩ শতাংশ, যা তাদের দারিদ্র্য নিরসনে বড় বাধা।

সভায় পিকেএসএফের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমের অগ্রগতি, সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়। উন্মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণকারীরা মাঠপর্যায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে কার্যকর সুপারিশ তুলে ধরেন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. এস কে রয়, সাজেদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাহেদা ফিজ্জা কবির এবং সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন অ্যান্ড প্র্যাকটিসেস (সিদীপ)-এর নির্বাহী পরিচালক মিফতা নাইম হুদা।

এনএইচ/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।