আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকে না বসার দাবি চিকিৎসকদের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৫৩ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সংহতি সমাবেশ

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস এবং এই আইন সংশোধনের প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানির সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠক না করার দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ঢাকা আহছানিয়া মিশন আয়োজিত এক সংহতি অনুষ্ঠানে এই দাবি জানানো হয়।

ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ বলেন, তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ অকালে মারা যায়। হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘমেয়াদি রোগের অন্যতম কারণ হলো তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার।

তিনি বলেন, এই প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু কমাতে এবং তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস করা জরুরি।

এফিসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রণীত বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি প্রস্তাব তুলে ধরেন ঢাকা আহছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের সহকারী পরিচালক ডা. নায়লা পারভীন।

সেগুলো হলো- সব ধরনের পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান সম্পূর্ণভাবে বিলুপ্ত করা; তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধে বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম (CSR) নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ; তামাকপণ্যের সব ধরনের খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।

সংহতি অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের জন্য আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর এনবিআর কর্তৃক তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর আর্টিকেল ৫.৩ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই ধারার অধীনে কোনো দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নে তামাক কোম্পানি বা তাদের সহযোগীদের মতামত গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ এই কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এটি মানতে বাধ্য।

বক্তারা আরও বলেন, তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত নীতিনির্ধারণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে সরকারকে অবশ্যই এফসিটিসি’র আর্টিকেল ৫.৩ সম্পূর্ণরূপে মেনে চলতে হবে। তারা জোর দিয়ে বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, কোনো অবস্থাতেই তামাক কোম্পানির স্বার্থকে নয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও সম্প্রতি বলেছেন, তামাকের বিরুদ্ধে তরুণ সমাজকে সচেতন করা না গেলে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

এসইউজে/কেএইচকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।