অপারেশন সিঁদুর
অবশেষে পাকিস্তানের কাছে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করলো ভারত
সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত তথা ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ একাধিক যুদ্ধবিমান হারানোর কথা অবশেষে স্বীকার করেছে ভারতের সামরিক বাহিনী। দেশটির চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান জানিয়েছেন, গত মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতে ভারত কিছু যুদ্ধবিমান হারিয়েছে। তবে কতগুলো বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলেননি তিনি।
শনিবার (৩১ মে) সিঙ্গাপুরে শ্যাংরি-লা ডায়ালগে ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল চৌহান বলেন, সংখ্যা মূল বিষয় নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো কেন সেই বিমানগুলো ভূপাতিত হলো, কী ভুল করা হয়েছিল এবং কীভাবে তা সংশোধন করে পরবর্তী অভিযানে আমরা সেগুলোকে ফের ব্যবহার করেছি।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের কৌশলগত ভুল বুঝতে পেরেছি, তা সংশোধন করে দুদিন পর আবার সফলভাবে দূরপাল্লার হামলা চালিয়েছি।
আরও পড়ুন>>
- ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস/ পাকিস্তানকে সাহায্যে স্যাটেলাইট সরিয়েছিল চীন
- ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে চীনা অস্ত্রের সম্ভার
- রাফাল, সুখোই বনাম এফ-১৬, জে-১০/ ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানের বহর কেমন?
এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দাবি করেছিলেন, তার দেশের সেনাবাহিনী ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে এতদিন এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি। এবার প্রথমবারের মতো ভারতের সামরিক বাহিনী বিমান হারানোর বিষয়টি আংশিকভাবে স্বীকার করলো।
জম্মু ও কাশ্মীরে গত ২২ এপ্রিল এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার পর দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।
চারদিনের সংঘর্ষে উভয় পক্ষ বিমান, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং গোলাবর্ষণ চালিয়েছে। এটি গত অর্ধ-শতাব্দীর মধ্যে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক মুখোমুখি ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
India’s military confirmed for the first time that it lost an unspecified number of fighter jets in clashes with Pakistan in May.
— Bloomberg TV (@BloombergTV) May 31, 2025
Anil Chauhan, chief of defense staff of the Indian Armed Forces, spoke to Bloomberg TV on Saturday, while attending the Shangri-La Dialogue in… pic.twitter.com/9y3GW6WJfn
পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জেনারেল চৌহান বলেন, আমি মনে করি, প্রচলিত যুদ্ধ এবং পারমাণবিক সীমানার মধ্যে এখনো অনেক ফাঁক রয়েছে। আমাদের মধ্যে যোগাযোগ চ্যানেল খোলা ছিল এবং আমরা পারমাণবিক পর্যায়ে যাওয়ার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিভিন্ন উপায় কাজে লাগিয়েছি।
চীন থেকে পাকিস্তান যে সামরিক সহায়তা পেয়েছে, তা কার্যকর হয়নি বলেও দাবি করেন জেনারেল চৌহান। তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তানের ভেতরে ৩০০ কিলোমিটার দূরে থাকা বিমান ঘাঁটিতেও নিখুঁতভাবে হামলা চালাতে পেরেছি।
ভারত ও পাকিস্তান এখন আন্তর্জাতিক মহলের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরার কূটনৈতিক প্রচারে ব্যস্ত রয়েছে। জেনারেল চৌহান বলেন, যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে, তবে সেটি ভবিষ্যতে পাকিস্তানের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। আমরা আমাদের স্পষ্ট ‘রেড লাইন’ নির্ধারণ করে দিয়েছি।
সূত্র: ব্লুমবার্গ
কেএএ/