ব্রাজিলের কিছু পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৮ পিএম, ০৭ আগস্ট ২০২৫
ব্রাজিলের কিছু পণ্যে ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প/ এআই দিয়ে তৈরি ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে ব্রাজিলের কিছু পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বুধবার (৬ আগস্ট) থেকে এই উচ্চহারে শুল্ক কার্যকর হয়। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে দমন করার অভিযোগ তুলে এই শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

হোয়াইট হাউজের ঘোষণায় বলা হয়েছে, ব্রাজিল সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বলসোনারো ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি, হয়রানি ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এই পদক্ষেপগুলো ব্রাজিলে আইনের শাসনকে দুর্বল করছে বলেও মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘অগ্রহণযোগ্য ব্ল্যাকমেল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, এ ধরনের একতরফা আরোপিত শুল্ক আমাদের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার একটি রাজনৈতিক চাল। তবে পশ্চিমা বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় ব্রাজিল এই শুল্ক মোকাবিলায় বেশি সক্ষম।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ব্রাজিলের রপ্তানি নির্ভরতা তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে দেশটি বড় ধরনের চাপে পড়বে না। রয়টার্স জানিয়েছে, ব্রাজিল তার মোট রপ্তানির মাত্র ১২ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে করে, বিপরীতে চীনে রপ্তানি করে প্রায় ২৮ শতাংশ পণ্য। তাই ওয়াশিংটনের এই চাপ ব্রাসিলিয়ার ওপর সীমিত প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা।

এদিকে বলসোনারোকে নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যেরও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন লুলা। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তির দরজা খোলা আছে। কিন্তু ব্রাজিলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে বাইরের হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।

সম্প্রতি ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে গৃহবন্দী করার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বলসোনারোর বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রেও তদন্ত চলছে, যার ফলে আদালতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

এদিকে ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রী ফার্নান্দো হাদাদ জানিয়েছেন, তিনি আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের সঙ্গে একটি ফোনালাপে অংশ নেবেন। আলোচনায় ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্কের সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

আগামী বুধবার (১৩ আগস্ট) আলোচনা হবে। বিষয়টি নিয়ে অগ্রগতি হলে সরাসরি বৈঠকের সম্ভাবনাও আছে, বলেন হাদাদ।

ট্রাম্পের এই শুল্ক কার্যকরের সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো যখন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার মিত্র বলে বিবেচিত দেশগুলোর ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি বলসোনারোকে সমর্থন না করার কথা বলেছে, তবে তাদের মানবাধিকার সংক্রান্ত অবস্থানকে অনেকে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ হিসেবেই দেখছেন।

সূত্র: রয়টার্স

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।