পশ্চিমবঙ্গ

অসুস্থ বাবাকে দেখতে যেতে না পারায় বাংলাদেশি নারীর আত্মহত্যা

পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি পশ্চিমবঙ্গ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩:২২ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০২৫

পশ্চিমবঙ্গে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন এক বাংলাদেশি নারী। এই ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই নারীর নাম কাকুলি সরকার (৩৩)।

জানা গেছে, ওই নারীর বাবার বাড়ি বাংলাদেশে এবং শ্বশুর বাড়ি ভারতে। গত ১৫ বছর আগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সবুজ সরকারের সঙ্গে বিয়ে হয় বাংলাদেশের নবাবগঞ্জের বাসিন্দা কাকুলি সরকারের (৩৩)। কাকুলি সরকারের দুই সন্তান রয়েছে।

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই কাকুলি সরকারের বাবা বেশ অসুস্থ। বাবাকে দেখতে যাবেন বলে স্বামী সবুজ সরকারকে বলেছেন কাকুলি। কিন্তু কাকুলির পাসপোর্ট না থাকায় সে বাংলাদেশে যেতে পারছিল না বাবাকে দেখতে। এ নিয়ে স্বামী সবুজ সরকারের সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলা হতো কাকুলির। স্বামী সবুজ সরকার বলেছিলেন, এসআইআর এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ নিয়ে যাবেন।

তার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পাসপোর্ট বানানোর জন্য নথী জমা দিলেও তার পাসপোর্ট আটকে যায়। গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বাড়ির ছাদে গিয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হয় কাকলী সরকার। পরবর্তীতে স্থানীয় থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

কাকুলির শাশুড়ি বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে ১৫ বছর আগে বাংলাদেশের বাসিন্দা কাকুলির বিয়ে হয়েছিল। বাবার অসুস্থ থাকার কারণে বাংলাদেশে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু পাসপোর্ট এর জন্য যেতে পারিনি। আমি বলেছিলাম পাসপোর্ট করে পরে ছয় মাসের জন্য বাংলাদেশ থেকে ঘুরে আসতে। অনেকবার ওর পাসপোর্ট বানানোর জন্য নথী দেওয়া হয়েছিল কিন্তু পাসপোর্ট হচ্ছে না। সবার পাসপোর্ট আছে কিন্তু ওর পাসপোর্ট হচ্ছিল না।

তিনি আরও বলেন, আমার বৌমা আমাকে কয়দিন আগেই বলেছিল এসআইআর এবং এনআরসি চালু হলে আবার কোথায় পাঠিয়ে দেবে? কোথায় গিয়ে থাকব? সবসময় এই আতঙ্কে থাকতো।

তিনি বলেন, সন্ধ্যার সময় শুয়েছিল হঠাৎ করে ছাদে যাওয়ার পর চিৎকার শুনে ওপরে গিয়ে দেখি এই ঘটনা। স্থানীয় কাউন্সিলর শুভ্রকান্তি ব্যানার্জি বলেন, একটি দুঃখজনক ঘটনা তবে তার পরিবারের সদস্যরা এসআইআর এবং এনআরসি সম্বন্ধে কিছুই বোঝেনা। পুলিশ একটি সুইসাইড নোট পেয়েছে সেটি নিয়ে গেছে। তার দুই সন্তান আছে তারা এখানে জন্মেছে, এখানকার নাগরিক। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি ডাইরি উদ্ধার করা হয়েছে এবং সেখানে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না’। আটক করা হয়েছে স্বামী সবুজ সরকার, শ্বশুর সুরেশ সরকার, ভাসুর শান্তি সরকারকে। কী কারণে কাকুলি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা জানার জন্য তদন্ত নেমেছে ব্যারাকপুর থানার পুলিশ।

ডিডি/টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।