কারফিউ-ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা আংশিক তুলে নিলো তানজানিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৩৪ পিএম, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
কারফিউ-ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞা আংশিক তুলে নিলো তানজানিয়া/ ছবি: এএফপি

নির্বাচনী সহিংসতার পর আরোপিত কারফিউ ও ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞার মতো কিছু বিধিনিষেধ মঙ্গলবার আংশিকভাবে তুলে নিয়েছে তানজানিয়া। ফলে রাজধানী দার এস সালামসহ বিভিন্ন এলাকায় মানুষ ধীরে ধীরে বাইরে বের হতে শুরু করেছে। বিরোধীদল দাবি করেছে, এই সহিংসতায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। খবর এএফপির।

দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২৯ অক্টোবরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তবে বিরোধীরা একে ‌‘প্রহসনমূলক নির্বাচন’ বলে অভিহিত করেছে।

নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার দিন থেকেই ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ ছিল, যদিও এখন তা আংশিকভাবে চালু হয়েছে। তবুও নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া এখনও কঠিন বলে জানিয়েছে এএফপি।

সংস্থাটির এক প্রতিবেদক দার এস সালামে স্বাভাবিক অবস্থা ধীরে ধীরে ফিরে আসার বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন। যদিও শহরজুড়ে আতঙ্ক এখনো রয়ে গেছে। ৩২ বছর বয়সী খাদ্য বিক্রেতা রেহেমা শেহোজা বলেন, আমি আশা করি সহিংসতা আর ফিরে আসবে না। তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমাদের অনেকেই না খেয়ে মারা যেত, কারণ প্রতিদিনের আয়ের জন্য আমাদের বাইরে বের হতে হয়।

পুলিশ সোমবার ঘোষণা করে, নির্বাচনের সময় জারি করা কারফিউ তুলে নেওয়া হয়েছে। আংশিকভাবে গণপরিবহন চালু হওয়ায় রাস্তায় কিছু বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। একইসঙ্গে পুনরায় খোলা গ্যাস স্টেশনগুলোর সামনে লম্বা লাইন দেখা গেছে, আর পরিবহন সংকটে মোটরসাইকেলের ভাড়াও বেড়ে গেছে।

তবে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি এখনো বিদ্যমান, যদিও তা কিছুটা কমেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহিংসতার গ্রাফিক ছবি ছড়িয়ে পড়ছে যেগুলোর সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছে, এমন কোনো ছবি বা ভিডিও প্রচার করলে শাস্তি দেওয়া হবে যা আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে বা কারো সম্মানহানি ঘটায়।

একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, দেশজুড়ে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে শত শত মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিরোধী দল চাদেমা জানিয়েছে, তারা শনিবার পর্যন্ত কমপক্ষে ৮০০ জনের মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত করেছে, যদিও এই সংখ্যাগুলো স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।

জয়ের ভাষণে প্রেসিডেন্ট সামিয়া হাসান সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাগুলো তদন্ত করবে। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।

এক কূটনৈতিক কর্মকর্তা আরও বলেন, পুলিশ ইন্টারনেট বন্ধের সুযোগে বিরোধী দলের সদস্য ও বিক্ষোভকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে, যাতে তারা সহিংসতার ভিডিও ছড়াতে না পারে।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে দার এস সালামের এক বাসিন্দা জানান, গত ৩০ অক্টোবর তার এক প্রতিবেশীকে বাড়ির সামনে সাধারণ পোশাক পরা এক ব্যক্তি গুলি করে হত্যা করে। নিহত ব্যক্তি কোনো বিক্ষোভে অংশ নেননি বলেও জানান তিনি।

টিটিএন

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।