রাশিয়ায় বিদেশি অ্যাপ ব্যবহারে কড়াকড়ি, বন্ধ স্ন্যাপচ্যাট ও ফেসটাইম
বিদেশি প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে রাশিয়া। এবার স্ন্যাপচ্যাট এবং অ্যাপলের ভিডিও কলিং সেবা ফেসটাইমে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। অনলাইন যোগাযোগ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থার ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করার অংশ হিসেবেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) পৃথক দুটি ঘোষণায় রাষ্ট্রীয় ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা রসকমনাডজর জানিয়েছে, এই প্ল্যাটফর্মগুলো দেশে সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংগঠিত ও পরিচালনা এবং অপরাধে জড়িতদের নিয়োগের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
বিদেশি প্রযুক্তি দমনের পাশাপাশি রাশিয়া নিজস্ব জাতীয় মেসেজিং অ্যাপ ম্যাক্স-এর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ভিকে-এর তৈরি এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বার্তা পাঠানো, সরকারি সেবা গ্রহণ এমনকি পেমেন্টের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যাবে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ওই দুটি অ্যাপের বিরুদ্ধে ১০ অক্টোবরই পদক্ষেপ কার্যকর করা হয়েছিল যদিও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এ সপ্তাহে দেওয়া হয়েছে। তবে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে অ্যাপল ও স্ন্যাপচ্যাটের মূল কোম্পানি স্ন্যাপ ইনক এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শাসনে রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরেই বহুস্তরীয় প্রচেষ্টা চলছে। অনলাইন ট্রাফিক নজরদারির প্রযুক্তি উন্নত করা হয়েছে এবং কঠোর আইন মানতে ব্যর্থ হওয়ায় বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০২২ সালে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই দমন আরও তীব্র হয়। এরই মধ্যে দেশটিতে এক্স, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ২০২৪ সালে কর্তৃপক্ষ সিগন্যাল এবং ভাইবার অ্যাপও ব্লক করে। আর ২০২৫ সালের আগস্টে হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে ভয়েস কল বন্ধ করা হয়।
এছাড়া গত বছর রাশিয়ায় ইউটিউবে প্রবেশ বিঘ্নিত হয়। বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করেন, কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে সাইটটির গতি কমিয়ে দিয়েছিল। ক্রেমলিন অবশ্য গুগলের ওপর দোষ চাপিয়েছিল। এজন্য রাশিয়ায় গুগল হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করে পুতিন প্রশাসন।
দৈনিক ৫ কোটির বেশি রুশ নাগরিক ইউটিউব ব্যবহার করেন এবং এটি এখনও দেশের অন্যতম বৃহৎ স্বাধীন মতপ্রকাশের প্ল্যাটফর্ম। অনেক সরকার-বিরোধী কণ্ঠও এখানেই সক্রিয়।
রসকমনাডজর আবারও দাবি করেছে, এসব প্ল্যাটফর্ম অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। গত সপ্তাহে সংস্থাটি হুমকি দিয়ে জানিয়েছে, যদি হোয়াটসঅ্যাপ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে প্রতারণা ও সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার না করে, তবে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হবে।
এ বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে রাশিয়ায় বিক্রি হওয়া সব নতুন স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটে ম্যাক্স অ্যাপ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অ্যাপটির ডেভেলপার জানিয়েছে, সরকার চাইলে তারা ব্যবহারকারীর তথ্য শেয়ার করবে।
সূত্র : আল-জাজিরা
কেএম