করোনা: দুঃস্বপ্ন কেটে আশা দেখছে স্পেন
টানা চতুর্থ দিনের মতো স্পেনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে। দেশটির সরকার বলছে, টানা চারদিন ধরে প্রাণহানি ধারবাহিকভাবে কমছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে বিশ্বে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু স্পেনে হয়েছে।
করোনায় বিপর্যস্ত স্পেনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেশটিতে করোনার সর্বোচ্চ প্রকোপ পার হচ্ছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা আশা করছেন। সোমবার দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে নতুন করে আরও ৬৩৭ জন মারা গেছেন। তবে এই সংখ্যা এক সপ্তাহ আগের মৃত্যুর চেয়ে প্রায় অর্ধেক।
স্পেনের জরুরি স্বাস্থ্য সেবা কমিটির উপপ্রধান মারিয়া জোসে সিয়েরা বলেছেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, এই মহামারির বৃদ্ধির হার প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে কমছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী আরানচা গঞ্জালেজ বলেন, বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য এখন আরও বেশি পরিমাণে পরীক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল অ্যান্টেনা থ্রি-কে তিনি বলেন, স্প্যানিশ জনগণের লক ডাউন তুলে নেয়ার আগে ধারাবাহিকভাবে আমাদের সংক্রমণ কমিয়ে আসছে কিনা সেটি জানা জরুরি। আর এটার জন্য আমরা নিজেদের প্রস্তুত করছি।
গঞ্জালেজ বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন ও সংক্রমিতদের পরীক্ষা করেছি। কিন্তু এই ভাইরাসটি যারা অজ্ঞাতভাবে বহন করছেন, যাদের কোনও লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে না; তাদের শনাক্ত করার জন্য এখন আমাদের গণহারে পরীক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশীয় কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। প্রত্যেক সপ্তাহে তারা এখন ২ লাখ ৪০ হাজার টেস্টিং কিট উৎপাদন করছে। তবে করোনা চিকিৎসার অন্যান্য সরঞ্জাম এখনো বিদেশ থেকে আনতে হচ্ছে।
করোনার বিস্তার ঠেকাতে গত ১৪ মার্চ থেকে স্পেনে লক ডাউন কার্যকর করা হয়। এর ফলে দেশটির জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, রাস্তা-ঘাটে এখন সুনশান নীরবতা নেমে এসেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যাঞ্চেজ বলেছেন, লক ডাউন আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
সোমবার পর্যন্ত করোনাভাইরাস সংক্রমণের ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে স্পেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩২ এবং মারা গেছেন ১৩ হাজার ৫৫ জন। তবে মৃত্যুতে ইউরোপে শীর্ষে রয়েছে ইতালি। দেশটিতে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ হাজার ৮৮৭ এবং আক্রান্ত ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৪৮ জন।
এসআইএস/এমকেএইচ