করোনায় অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠছে চীন
অডিও শুনুন
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের অর্থনীতিতে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। লাখ লাখ মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বহু ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেছে।
তবে এই মহামারি পরিস্থিতিতেও অনেক দেশই অর্থনৈতিক বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। এর বড় উদাহরণ হচ্ছে চীন। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনেই প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপরেই তা আস্তে আস্তে বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
করোনার প্রাদুর্ভাবের প্রথমদিকে চীনকে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে হয়েছে। কিন্তু কঠোরভাবে কয়েক মাসের প্রচেষ্টায় করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে বেইজিং। আর তার ফলাফলও পাচ্ছে দেশটি।
সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ক্রমশ সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশটির অর্থনীতি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থনীতির এই দেশটি গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে ৪.৯ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা এর আগে ধারণা দিয়েছিলেন যে, চীনের প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশের কম থাকতে পারে। বর্তমানে দেশটির মাথাপিছু জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) মাধ্যমে বৈশ্বিক ক্ষতি পুনরুদ্ধারের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে প্রায় ৫ ভাগের কাছাকাছি প্রবৃদ্ধি অর্জন খুব কম কথা নয়। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে চীনের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে ৬.৮ শতাংশ। দেশজুড়ে সব কলকারখানা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তথ্য বলছে, ধীরে ধীরে আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠছে চীন। যদিও বিশেষজ্ঞরা চীনের প্রকাশিত অর্থনৈতিক তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
হংকংয়ের আইএনজি এর প্রধান চীনা অর্থনীতিবিদ আইরিস প্যাং বলেন, আমি মনে করি চীন যে তথ্য প্রকাশ করেছে তা খুব খারাপ নয়। চীনে কর্মসংস্থান আসলেই স্থিতিশীল। এর ফলে প্রচুর ভোক্তা চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে।
সেপ্টেম্বরে চীনের বাণিজ্যও অনেক বেড়ে গেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় দেশটিতে রফতানি বেড়েছে ৯.৯ ভাগ এবং আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩.২ ভাগ।
গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চীনের গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শতকরা প্রায় ৯ ভাগ। যদিও তা ধীর গতিতে অগ্রসর হয়েছে। তবে চলতি বছর করোনা মহামারি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে চীনের প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিঘ্ন ঘটেছে।
টিটিএন