বিশ্বে করোনা আক্রান্তের মাত্র ৪ শতাংশ আফ্রিকার
দ্বিতীয় দফায় বিশ্বজুড়ে করোনার যে ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে; প্রথম দফার মতো এবারও আফ্রিকা মহাদেশে নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন তুলনামূলক কম মানুষ। আফ্রিকার আঞ্চলিক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গোটা আফ্রিকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বিশ লাখ ছাড়িয়েছে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট রোগীর সংখ্যা ২০ লাখ ১৩ হাজার ৩৮৮ জন। সেই হিসাবে বিশ্বে এখন পর্যন্ত মোট কোভিড-১৯ সংক্রমিত মানুষের মাত্র চার শতাংশ আফ্রিকার। অথচ আফ্রিকায় কয়েক কোটি আক্রান্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
তবে বিশেষজ্ঞরা অবশ্য একে শুধু আফ্রিকার মহামারি মোকাবিলার অভিজ্ঞতা ও সামর্থ্য হিসেবে দেখে অঞ্চলটির সাফল্য হিসেবে মানতে নারাজ। তারা এর সঙ্গে ১৩০ কোটি বাসিন্দার অঞ্চলটিতে বিশ্বে সবচেয়ে কম করোনা পরীক্ষা ও অনেকের আক্রান্ত-মৃত্যুর বিষয়টি তালিকাভূক্ত না হওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরছেন।
বিশ লাখের বেশি আক্রান্তের মধ্যে আফ্রিকায় এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৪৮ হাজারের কম। সুদান, শাদ এবং মিসরের মতো দেশগুলোতে মৃত্যুহার যথাক্রমে ৭ দশমিক ৮১, ৬ দশমিক ২৮ এবং ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ; দারিদ্র্যপীড়িত মহাদেশে আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে করোনায় মৃত্যুহারে শীর্ষে রয়েছে এই তিন দেশ।
আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়; প্রায় সাত লাখ ৫০ হাজার। দেশটিতে করোনায় মৃত্যুহার ২ দশমিক ৭১ শতাংশ। বিশ্বের প্রায় ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষের বাসস্থান আফ্রিকায় প্রতি দশ হাজারে ১৫ জন মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানাচ্ছে রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আমেরিকা এবং ইউরোপের তুলনায় আফ্রিকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম। অন্যান্য মহাদেশের চেয়ে আফ্রিকায় দেরীতে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্টরা মাঠে হাসপাতাল তৈরি, অক্সিজেন ও ভেন্টিলেটর মজুত এবং অন্যদের দেখে অনেক কিছু শিখতে পেরেছে।
প্রাদুর্ভাব দেরিতে শুরু হলেও করোনার বিস্তার ঠেকাতে গত মার্চেই বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর লকডাউন নিষেধাজ্ঞা জারি করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তখন দেশটিতে শনাক্ত রোগী ছিল মাত্র ৪০০ জন। ফলে আক্রান্ত ও মৃত্যু তালিকাভূক্ত বাদ দিলেও এটাকে মহামারি মোকাবিলায় আফ্রিকার সাফল্য হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
এসএ/জেআইএম